গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালিয়াকৈর থানার হরিণহাটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘাতক নাহিদ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তার কাছ থেকে আজাদের ব্যবহৃত মোবাইলফোন, নগদ সাড়ে তিন হাজার টাকা ও একই এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে নিহতের অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার গোসাত্রা এলাকার একটি সবজিক্ষেত থেকে অজ্ঞাত খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটি নিজের ভাইয়ের বলে শনাক্ত করেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজু মিয়া।
র্যাব-১ এর সিও কর্নেল মোমেন বলেন, গ্রেফতার নাহিদ দুই বছর আগে হরিণহাটি এলাকায় ভ্যান গাড়িতে করে কাঁচা সবজির ব্যবসা শুরু করে। এ সবজি পরিবহনের সূত্রে আজাদের সঙ্গে নাহিদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে বব্যবসা বাদ দিয়ে নাহিদ অটোরিকদশা কিনে চালানো শুরু করেন।
কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে নাহিদের রিকশার ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায়।
ব্যাটারি কেনার জন্য সমবায় সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা কিস্তি নেন নাহিদ। এ টাকা নিয়ে ব্যাটারি কিনতে যাওয়ার পথে আজাদের সঙ্গে তার দেখা হয়। এসময় আজাদ তার গাড়িতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। আজাদের অটোরিকশায় সফিপুর থেকে আনসার একাডেমি হয়ে নির্জন জঙ্গলের মধ্যখানের রাস্তায় গেলে গাড়ি থামিয়ে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিয়ে পাশে যান আজাদ।
এসময় জঙ্গল থেকে দুজন ব্যক্তি গাড়িতে থাকা নাহিদকে ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনায় নাহিদ হোসেন মনে মনে আজাদের সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত (৪ ফেব্রুয়ারি) নাহিদ হোসেন আবারও কাঁচা তরকারির ব্যবসা করবে জানিয়ে সবজি পরিবহনের জন্য আজাদকে ডাকেন।
এসময় হত্যার উদ্দেশ্যে সফিপুর বাজারের ফুটপাত থেকে ৩০ টাকা দিয়ে একটি চাকু কেনেন। পরে অটোতে করে কাঁচা তরকারি আনার জন্য রওয়ানা হয়ে কালিয়াকৈর থানার গোসাত্রা সবজি ক্ষেতে নিয়ে প্রথমে আজাদকে গলা টিপে ধরে মাটিতে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য চাকু দিয়ে গলা কাটার পরও মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।
নাহিদের টাকা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা গেছে কি না জানতে চাইলে র্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, ঘটনার শুরুতে টাকা ছিনতাইয়ের বিষয়টি আসেনি। হত্যায় জড়িত নাহিদকে গ্রেফতারের পর তিনি টাকার বিষয়টি জানিয়েছেন। আমরা কাজ করছি। ছিনতাইটি পরিকল্পিত কি না বা কারা জড়িত সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে।