মাসে গ্যাসের জন্য কতটা বেশি দিতে হয়? আর আলুর জন্য?

বাজারকর্তা আলু ছাড়া বাঙ্গালির রান্নাঘর অচল, যেমন অনেকটাই অচল গ্যাসের জন্য। তাই গ্যাসের দাম বাড়লে, নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত, সবাই ‘গেল, গেল’ রব তোলেন। কিন্তু আলুর দাম দীর্ঘদিন ‘বাড়ন্ত’ অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়ে হেলদোল নেই কারও, না ক্রেতার, না সরকারের। নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের কাছে বিষয়টা কষ্টের হলেও, তারা মেনে নিতে বাধ্য। কারণ আলু না খেয়ে তো বসে থাকা যায় না, তাই অন্য খাতে খরচ কমিয়ে আলু-খাতে বরাদ্দ ঠিক রাখতে হচ্ছে। কিন্তু আর কতদিন? গ্যাস না হয় একটা হলেই ছোট পরিবারে এক মাস/দেড় মাস চলে যায়। কিন্তু আলু? কতটা লাগে? দিনে সবচেয়ে কম ৭৫০ গ্রাম ধরলে, মাসে ২৩ কেজির মতো। দাম না কমায় জ্যোতি আলুর জন্য এই সময়ে গড়ে ১০x২৩= ২৩০ টাকা বেশি দিতে হয়। কেননা, এই সময় জ্যোতি আলু ১৬ থেকে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হতো। তাহলে আলুর জন্য মানুষকে কী বেশি দিতে হয় না? গ্যাসের চেয়ে কম কি? না, অনেক বেশি? স্বভাবতইঃ প্রশ্ন উঠবে, তাহলে আলু চাষীদের কী হবে?

বিগত, বহু বছর ধরে দেখেছি, আলু চাষীরা লাভ ও লোকসানের ভিতর দিয়েই যান। কিন্তু আলু ওঠার পর, নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ‘দালাল’ ও ব্যবসায়ীদের হাতে। তারাই তখন বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করে। ছোট চাষীরা যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই থেকে যায়। কারণ তাদের জমি কম, চাষ করতে হয় ধার-দেনা করে, আলুর ওঠার পর সেই দেনা শোধ করতে হয়, কম দামে আলু ছেড়ে দিয়ে। 

কোল্ড স্টোরেজে দীর্ঘদিন ধরে আলু রেখে লাভ করতে পারে বড়ো ও মাঝারি চাষী কিংবা ব্যবসাদাররা। আখেরে, কারা পায়, এই অতিরিক্ত দাম? সত্যি কি আলুচাষীরা? কিন্তু ব্যবসায়ীদের মুনাফা বাড়ানোর জন্য সাধারণ ক্রেতারা কেন কষ্ট করবেন? গ্যাসের দাম বাড়লে, যেমন চারদিক থেকে আওয়াজ ওঠে, আলুর দাম বাড়লেই কেন বারবার যোগানের কথা ওঠে? বছরের শেষে দেখা যায় কোল্ড-স্টোরেজে যথেষ্ট আলু তখনো পড়ে আছে। এই বছর এমন একতা বছর, যেখানে নতুন আলু ওঠার পর থেকে এখনো পর্যন্ত আলু কিনতে হচ্ছে, অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি দামে। তাই ভাববার সময় সরকারের, কারণ আলু নিয়ে এই সরকার অনেকবার সদর্থক ভূমিকা নিয়েছিল। তাই এবারো সরকারের মুখাপেক্ষী সাধারণ মানুষ।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad