শুধু ২০১১ থেকে ২০১৯ নয়, ২০২০ সাল থেকে ভয়াবহ কোভিড পরিস্থিতিতেও তাদের পরিষেবা ব্যহত হয়নি। পুরুলিয়া সহ আরো কয়েকটি জেলায় কোভিড ওয়ার্ডে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে এইসমস্ত চিকিৎসকদের নিয়োজিত করা হয়। কিন্তু তারা কোভিড যোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি।
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আজ স্বাস্থ্য ভবন অডিটোরিয়ামে বিকেল ৩থেকে অনুষ্ঠিত হল West Bengal Ayush Doctors' Network GPMO (NHM) Service এর ১ম রাজ্য সম্মেলন। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের চেয়ারপার্সন সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন, ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী, অতিরিক্ত ডিরেক্টর (হোমিওপ্যাথি) ডাঃ আশীষ ঘোষ এবং ডক্টরস নেট-ওয়ার্কের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এদিনের এই অনুষ্ঠানে সংস্থার চেয়ারম্যান সাংসদ ও ডাঃ শান্তনু সেন কোভিডকালে আয়ুষ চিকিৎসক দের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন। ওই সময় আয়ুষ চিকিৎসকদের সহায়তা কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে রাজ্য সরকারকে ভীষণ সাহায্য করেছে। তিনি বলেন, "রাজ্যের আয়ুষ চিকিৎসকরা তাদের সাম্মানিক বৃদ্ধির দাবি করতেই পারেন, কিন্তু বর্তমানে রাজ্য সরকার এক কঠিন আর্থিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।“
পঞ্চায়েত স্তরে কর্মরত আয়ুষ চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে এদিন একগুচ্ছ দাবি তোলা হয়। এই দাবিতে তাদের বর্তমান অবস্থা ও অবস্থান যেমন তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি বেশ কিছু দাবির দিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দাবিটি হলো, তাদের পঞ্চায়েতের হাত থেকে তুলে নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের NHM এর অধীনে আনা।
বলা হয়েছে, ২০১১ সাল থেকে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে নিযুক্ত আয়ুষ চিকিৎসকরা রাজ্যের প্রতিটি জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে দ্বায়িত্বপূর্ণভাবে আয়ুষ চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে চলেছেন। তারা প্রতিদিন ৬ঘন্টা করে সপ্তাহে ৫দিন বহিঃবিভাগে আয়ুস চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত।
শুধু ২০১১ থেকে ২০১৯ নয়, ২০২০ সাল থেকে ভয়াবহ কোভিড পরিস্থিতিতেও তাদের পরিষেবা ব্যহত হয়নি। পুরুলিয়া সহ আরো কয়েকটি জেলায় কোভিড ওয়ার্ডে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে এইসমস্ত চিকিৎসকদের নিয়োজিত করা হয়। কিন্তু তারা কোভিড যোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি।
অভিযোগ, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে তারা নিযুক্ত হলেও, তাদের পরিচালনায় রয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তর, তাই স্বাস্থ্য দপ্তর তথা রাজ্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন তাদের কোন সমস্যা সমাধানে, পরামর্শ দানে আগ্রহী নন।
এই সংগঠনের তরফে যে যে বিষয়গুলির দিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সাম্মানিক বৃদ্ধি।
বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে তাদের সাম্মানিক বৃদ্ধি করা হয়। তখন তাদের কাজের সময় নির্দিষ্ট ছিল ৪ঘন্টা প্রতিদিন হিসাবে,সপ্তাহে মোট ৫দিন। তখন সাম্মানিক দেওয়া হতো মাসিক ১৬০০০.০০ টাকা, যা বর্তমানে দেশের সব রাজ্যের তুলনায় সর্বনিন্ম।
২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর থেকে তাদের কাজের সময় বেড়ে দাঁড়ায় প্রতিদিন ৬ ঘন্টা হিসাবে সপ্তাহে ৫দিন।
এরপর ৭ বছর কেটে গেলেও তাদের সাম্মানিক বাড়েনি।
এদিন সংগঠনের পক্ষ থেকে আরো বেশ কয়েকটি সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়। যেমন, আয়ুষ চিকিৎসক দের সমস্যার সমাধানের ব্যাপারটা ঠিক কারা করবেন, তা নিয়ে তাদের মধ্যেই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
তারা বলেছেন, “কোন সমস্যা সমাধানে পঞ্চায়েত দপ্তর এ গেলে বলা হয় তারা শুধু "Supervising & disbursed authority "। আমাদের বিষয়ে তারা কোন সাহায্য করতে পারবেন না। NHM দপ্তরে গেলে বলা হয় তারা শুধু " Fund provide " করেন। Appointing authority তারা নন তাই আমরা তাদের Stuff না। কিছু সাহায্য করতে পারবেন না।“
এছাড়া রয়েছে, চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব। সঠিক সময়ে সাম্মানিক না পাওয়া।
পাশাপাশি তারা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে পঞ্চায়েত স্তরে নিযুক্ত আয়ুষ ডাক্তারবাবুদের স্বাস্থ্যদপ্তরের অধীন অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।