প্রেমের টানে বাংলাদেশে ইতালির যুবক

বিশ্বজিৎ মন্ডল, ঢাকা: প্রেম মানেনা কোন বাঁধা, তাইতো ভালোবাসার টানে সাতসমুদ্র তেরো নদী পার হয়ে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ে এলেন ইতালির এক যুবক। প্রেম বা ভালবাসা হচ্ছে এক কথায় অদৃশ্য অথচ সচ্ছতায় তৈরি এক বস্তু, যা শ্রদ্ধা, আবেগ, সহানুভুতি, স্নেহ, বিশ্বাস এর সমন্বয়ে তৈরি। যা দুটি মনকে একত্র করে। দুটি মানুষকে পাশাপাশি রাখে। সেই প্রেমের টানে ইতালি থেকে এসে আলী সান্দ্রে চিয়ারোমিন্তে (৩৯) নামে এক যুবক বিয়ে করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালীয়াডাঙ্গীর এক তরুণীকে। 

সোমবার (২৫ জুলাই) রাতে সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তরুণী রত্না রানী দাসের (১৯) বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের খোকোপাড়া গ্রামে। তার বাবা দিনমজুর মারকুস দাস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম ও চাড়োল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায়। রত্নার বাবা মারকুস দাস বলেন, আমার এক ভাই ইতালি থাকেন। তার মাধ্যমেই জামাইয়ের সঙ্গে আমার মেয়ের পরিচয় হয়। তারপর মোবাইল ফোনে তাদের কথাবার্তা হয়। জামাই গতকাল দুপুর ১টায় বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর গতকালই আমাদের বাড়িতে আসে। ধর্মীয় সব আইনকানুন মেনে ধুমধাম করে তাদের বিয়ে দিয়েছি। রত্না রানীর মা জানগি দাস বলেন, আমার দেবর তার পরিবার নিয়ে ইতালি থাকে। সেখান থেকে আমাদের প্রস্তাব দেয়। পরে প্রস্তাবের মাধ্যমে আমার মেয়েকে জামাই পছন্দ করে। পরে আমরা ধুমধাম করে এবং আয়োজন করে বিয়ে সম্পন্ন করেছি। আমার জামাই আমার মেয়েকে ইতালি নিয়ে যাবে। পরে আমরাও যাব। 



রত্না রানী বলেন, সান্দ্রে সম্পর্কে আমার চাচা আমার মা-বাবাকে প্রস্তাব দেন। পরে তারা ইমুতে যোগাযোগ করেন। আমিও কথা বলি। একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। চাচা আমাকে ইতালির কিছু ভাষা শিখিয়ে দিয়েছিলেন। সেগুলো দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলি। তারপর গতকাল আমাদের বিয়ে হয়। সান্দ্রে অনেক ভালো মনের মানুষ। সে সবকিছু মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। সেও আমাদের ভাষা শেখার চেষ্টা করছে। আলী সান্দ্রে চিয়ারোমিন্তে বলেন, ইতালিতে রত্নার চাচার সঙ্গে আমি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। সেখানে দেখেছি তিনি অনেক সুন্দর দাম্পত্য জীবন পরিচালনা করেন। সেখান থেকেই আমি অনুপ্রাণিত হয়ে চাচা জোসেফকে বলি বাংলাদেশে বিয়ে করার কথা। তিনি রত্নার বিষয়ে আমাকে প্রস্তাব দেন। আমারও তাকে অনেক পছন্দ হয়। গতকাল এসে এখানে আয়োজন করে বিয়ে করেছি। এদিকে আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিতে ধুমধাম করে বিয়ে হলো। 

অন্যদিকে সান্দ্রে ও রত্নাকে দেখতে মারকুসের বাড়িতে ভিড় করছেন পাড়াপ্রতিবেশীরা। বিদেশি তরুণের সঙ্গে বিয়ে হওয়ায় তারাও বেশ উচ্ছ্বসিত। চাড়োল ইউপি চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায় বলেন, গতকাল বিয়ের মাধ্যমে তাদের প্রণয় ঘটে। আমি নিজেও বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ভিসা-সংক্রান্ত কাজ শেষ করে ছেলেটি তার স্ত্রীকে ইতালি নিয়ে যাবেন। এতে মেয়ের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসবে বলে মনে করি। বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ইসলাম ডন বলেন, ইতালিয়ান নাগরিক বাংলাদেশে এসে ঠাকুরগাঁওয়ের তরুণীকে বিয়ে করেছেন। আমরা খবর পাওয়ামাত্রই তরুণীর বাড়িতে সার্বিক নিরাপত্তা দিয়েছি।
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad