নেই দুটো হাত, একটা পা, তবু জীবনযুদ্ধে হার না মানা এক অদম্য তামান্না

বিশ্বজিৎ মন্ডল, ঢাকা: জন্মগতভাবেই দুই হাত, এক পা বিহীন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সেই তামান্না আক্তার নূরা গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ‘ক’ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকেলে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ওয়েবসাইটে গুচ্ছের ‘ক’ ইউনিটের ফল প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ফলাফলে তামান্নার মার্কস এসেছে ৪৮.২৫। বিষয়টি তামান্না নিজেই নিশ্চিত করেছেন। এবারের 'এ' ইউনিটের পরীক্ষায় পাসের হার ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
গত ৩০ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তামান্না। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির সন্তান। অদম্য এ তরুণী শুধু এক পা দিয়ে লিখে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব কয়টি পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে চমক দেখান। তার এ সাফল্যে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহেনা খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে তামান্নার স্বপ্নপূরণে এগিয়ে আসেন তারা। তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থাও করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা। মেধাতালিকায় প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্ছ্বসিত তামান্না। প্রথমে সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তামান্না বলেন, ‘প্রাথমিক রেজাল্টে খুশি লাগছে। মার্কসও ভালো। আশা করি যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাব। আশা করি সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় মাইক্রোবায়োলজিতেই পড়ার সুযোগ পাব।’
তামান্নার বাবা রওশন আলী জানান, তামান্নার স্বপ্ন গবেষণাধর্মী কোনো বিষয়ে পড়াশোনা করে বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরি নেওয়ার। স্বপ্ন পূরণে কয়েক মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে তার চান্স হয়নি। যবিপ্রবিতে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেই রেজাল্টে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। যবিপ্রবির সহকারী পরিচালক (গণসংযোগ) আব্দুর রশিদ অর্ণব বলেন, ‘তামান্নার প্রতিবন্ধী কোটায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সেই সুযোগ নেয়নি। নিজের মেধার জোরে সে পড়াশোনা করতে চায়। তার এই অদম্য পথচলা অবশ্যই প্রশংসিত। তার জন্য শুভ কামনা রইল।
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad