উত্তরপ্রদেশে দুই দলিত নাবালিকা বোন হত্যাঃ গ্রেপ্তার ৬, নেপথ্যে কী এবং কেন?

মৃতাদের পরিবারের অভিযোগ, মেয়েদুজনকে তিনজন ছেলে এসে মোট-সাইকেলে জোর করে তুলে  নিয়ে যায়। পুলিশ বলছে, মেয়েগুলি স্বেচ্ছায় অভিযুক্তদের সঙ্গে গিয়েছিল। প্রশ্ন, যদি ওরা স্বেচ্ছায় গিয়ে থাকে, তাহলে ওদের খুন করা হলো কেন? ওদের হত্যা করার পিছনে সঠিক কারন কী? ধর্ষণের পর প্রমান লোপের চেষ্টা, নাকি এর পিছনে আরো বড় রহস্য আছে!

অলোকেশ শ্রীবাস্তব, লখনউঃ উত্তরপ্রদেশের খেরির নিঘাসান থানা এলাকায় দুই দলিত নাবালিকা বোনকে ধর্ষণ- হত্যার মামলা এই মুহুর্তে দেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এমনিতেই উত্তরপ্রদেশে প্রায়ই এইধরণের কিশোরী ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ‘নিয়মিত ঘটনা’ বলে বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করছে। বাস্তব ঘটনাও প্রায় তাই। দুটি ছোট বোনকে যেভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হলো, তা নাড়িয়ে দিয়েছে সব শ্রেণির মানুষকেই। সে দলিত হোক বা না হোক। কিন্তু, এই মুহুর্তে একটা প্রশ্ন এলাকাবাসীকে নাড়া দিচ্ছে। তা হলো, পুলিশের 'স্বেচ্ছায় ওই মেয়েদের যাওয়া' আর মায়েদের অভিযোগ 'জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া' - কার বক্তব্য ঠিক?
জানা গেছে, পুলিশ এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের মতে, গ্রেপ্তার হওয়া দু'জন অভিযুক্ত তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। জানা গেছে, এরা সকলেই পরস্পরের বন্ধু, এমনকি যারা মারা গেছে, সেই দুই বোনওএদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিল। এরা সকলেই লখিমপুর খেরির লালপুরের বাসিন্দা। পুলিশের বক্তব্য, অভিযুক্তরা  দুই বোনকে প্ররোচিত করে খামারে নিয়ে যায়, সেখানে প্রথমে তাদের ধর্ষণ করা হয় এবং তারপরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এর পরে আখের ক্ষেতে একটি গাছ থেকে দু'টি মৃতদেহকে ঝোলানো হয়। হত্যার পর অভিযুক্তরা প্রমান লোপের চেষ্টা করে।  খেরির এক বাসিন্দা জানান, মৃত বোনদের মৃতদেহে পুরো পোশাক ছিল এবং ঘাড় ছাড়া শরীরের অন্য কোনও অংশে আঘাতের চিহ্ন নেই।
মৃতাদের পরিবারের দাবি, দুই বোনকে প্রথমে অপহরণ করা হয়েছিল এবং তারপরে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছিল। ওদের দুজনকেই তমোলিন পুরওয়া গ্রাম থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। নাবালিকা মায়ের লিখিত অভিযোগের পরে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এই মামলায় এফআইআর দায়ের করে। আই পি সি র ধারা ৩০২, ৩০৬ এবং পকসো বিভাগের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট সঞ্জীব সুমান বলেন, “এই মামলায় মোট ৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হল ছোটু, জুনায়েদ, সোহেল, হাফিজুল, করিমুদ্দিন এবং আরিফ। অভিযুক্ত জুনায়েদ পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তার পায়ে গুলি করে ধরা হয়। এদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মৃতাদের পরিবারের অভিযোগ, মেয়েদুজনকে তিনজন ছেলে এসে মোট-সাইকেলে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। পুলিশ বলছে, মেয়েগুলি স্বেচ্ছায় অভিযুক্তদের সঙ্গে গিয়েছিল। প্রশ্ন, যদি ওরা স্বেচ্ছায় গিয়ে থাকে, তাহলে ওদের খুন করা হলো কেন? ওদের হত্যা করার পিছনে সঠিক কারন কী? ধর্ষণের পর প্রমান লোপের চেষ্টা, নাকি এর পিছনে আরো বড় রহস্য আছে!

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad