নিজস্ব প্রতিনিধি, নতুন দিল্লিঃ গুজরাতের মোরবির ঝুলন্ত সেতু দুর্ঘটনার নেপথ্যে ঠিক কী ছিল? দাবি করা হয়েছিল অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে ভেঙ্গে পড়েছে সেতু, কিন্তু যে সেতু গত ৭ মাস ধরে মেরামত হয়েছে, সেই সেতু এত সহজে ভেঙ্গে পড়ল। এখন এই সেতু বিপর্যয় নিয়ে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে।
তবে, যে তথ্য দুটো সামনে আসছে তা হলো মোরবির শতাব্দী প্রাচীন ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষনের কাজের জন্য কোনও টেন্ডারই ডাকা হয়নি।
কোনও রকম টেন্ডার না ডেকেই মোরবির ব্রিজ মেরামতির জন্য ডাকা হয়েছিল এক কোম্পানিকে। কিন্তু কোম্পানি পুরনো কেবল বদলও করেনি।
জানা গেছে, পুরসভা নিজেদের মত করে গুজরাতের একটি সংস্থাকে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছিল।
মোরবি শহর পুরসভার কাগজ পত্র দেখে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।সেতুটি ছিল ব্রিটিশ আমলের, ১৪০ বছরের পুরানো। তাই প্রয়োজন হয়েছিল সেতুর ‘কেবল’ মেরামত করার। জানা যাচ্ছে, এই কেবল বদলানো হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা কেবলের যে নমুনা তুলে এনেছিলেন, তা পরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে তা মনে হচ্ছে। ওরেভা একটি ছোট নির্মাণ সংস্থা দেবপ্রকাশ সলিউশনসের কাছে "সংস্কারের প্রযুক্তিগত দিক" আউটসোর্স করেছে বলে জানা গেছে। গত সপ্তাহে সেতুটি উদ্বোধনের সময়, ওরেভার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়সুখভাই প্যাটেল বলেছিলেন যে সেতুটির ১০০ শতাংশ সংস্কার করা হয়েছে। এদিকে, আম-আদমী পার্টির নেতা কেজরিওয়াল বলেছেন, 'এটা দুর্নীতি। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।'
এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য কে দায়ী তা নিয়ে শুরু হয়েছে দোষারোপের খেলা। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন গুজরাট সরকার এই ২৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির সংস্কারে যে কোনও ভূমিকা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে। সরকার দাবি করেছে যে ওরেভার কাছে সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার অনুমতি ছিল না।
অন্যদিকে, মোরবি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের প্রধান আধিকারিক সন্দীপসিংহ জালা বলেন, "এটি একটি সরকারি টেন্ডার ছিল। সেতুটি খোলার আগে তার কী কী সংস্কার করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত বিবরণ দেওয়ার কথা ছিল ওরেভা গ্রুপের। এছাড়া, একটি গুণমান পরীক্ষা করার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। সরকার এ বিষয়ে অবগত ছিল না'।
রাজকোট রেঞ্জের আইজি অশোক যাদব বলেন, "প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে প্রযুক্তিগত এবং কাঠামোগত ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, যার মধ্যে শংসাপত্রের পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের কিছু সমস্যা রয়েছে।