এক শোকস্তব্ধ পরিবেশ আজ যেন কলেজের সমস্ত আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছিল। কলেজের সব ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে ভালো করে চেনার আগেই চলে গেল নীলাঞ্জন। তার এই অকাল-মৃত্যুতে শুধু ডিগ্রি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা নয়, শোকগ্রস্ত কলেজের শিক্ষক মন্ডলী, কর্মী, ছাত্র ইউনিয়ন, এমনকি যে ব্যক্তি গেটে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচয়পত্র চেক করেন, তিনিও।
নীলাঞ্জনের স্মৃতির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে সকলে এদিন নীরবতা পালন করেন, দুপুরের পর তার স্মৃতির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে ছুটি হয়ে যায় কলেজের। এদিন কলেজের সবার মুখেই নীলাঞ্জনের কথা। সে যে আর এই কলেজের গেট দিয়ে কোনদিন ভিতরে আসবে না, এই সত্যটাও কেউ মেনে নিতে পারছে না।
সবেমাত্র তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়েছিল গোপীনগরের নীলাঞ্জন বসু। অনেক স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু, নববর্ষের প্রথম দিন এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তাকে কেড়ে নিল তার বাবা-মার কাছ থেকে, কলেজের আঙ্গিনা থেকে। বছরের প্রথম দিন সে বন্ধুদের সঙ্গে দামোদরের ধারে গিয়েছিল পিকনিক করতে।
কিন্তু, নদে স্নান করতে গিয়ে আর সে উঠে আসে নি। দুপুর থেকে তল্লাশী চললেও নীলাঞ্জনের কোন হদিশ পাওয়া যায় নি। জাল ফেলেও খোঁজ পাওয়া যায় নি তার। এরপর খবর দেওয়া হয় ডুবুরীদের। কিন্তু ডুবুরীরাও তার হদিশ করতে পারেনি।
রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও তার দেহ উদ্ধার করা যায় নি। তবে তখন, অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল, হয়ত, নীলাঞ্জন আর বেঁচে নেই।
অবশেষে আজ সকাল থেকেই জলে নামে স্পীড বোট আর ডুবুরী। গতকাল বেলা ১২ টার পর তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
তার এই অকাল-মৃত্যুকে এখনো মেনে নিতে পারছে না কেউই। সকলেই ভাবছেন নীলাঞ্জন আছে। এখনি হয়তো বলে উঠবে, কি রে, কেমন আছিস তোরা!