'ক্রাইম পেট্রোল' দেখে অপহরণের ছক, মুক্তিপণ না পেয়ে কিশোরকে হত্যা, ৫ স্কুলছাত্র আটক

বিশ্বজিত মন্ডল, ভয়েস ৯,ঢাকা ব্যুরোঃ বাংলাদেশের খুলনা জেলার ডুমুরিয়ায় উপজেলায় মুক্তিপণের দাবিতে নিরব মণ্ডল নামে স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। উপজেলার গুটু‌দিয়া এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 
নিরব মণ্ডল (১৩) গুটুদিয়া পূর্বপাড়ার পান-সুপারি ব্যবসায়ী শেখর মণ্ডলের ছেলে এবং গুটু‌দিয়া মাধ্যমিক বিদ‌্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একই স্কুলের ৫ ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, ভারতের 'ক্রাইম পেট্রোল' দেখে মুক্তিপণের দাবিতে নিরবকে অপহরণের পরিকল্পনা করে তারা। আটক ৫ স্কুলছাত্র হলো- গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র সোহেল, হীরক রায় ও পিটু মন্ডল এবং দশম শ্রেণির পিয়াল রায় ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ মন্ডল। এদের মধ্যে পিয়ালের বাড়ি ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া তেলিগাতি এলাকায় এবং অন্য চারজনের বাড়ি গুটুদিয়া এলাকায় এ ঘটনায় মামলা দায়ের এবং আটক ৫ স্কুলছাত্রকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। 
ময়নাতদন্তের জন্য নিরবের মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর নিরবকে ডেকে স্কুলের পেছনের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায় দশম শ্রেণির ছাত্র পিয়াল রায়। নিরবকে সেখানে আটকে রেখে তার বাবা শেখর মণ্ডলকে ফোন করে সোহেল ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তখন সোহেলের সঙ্গে নিরবের বাবার বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর নিরবের বাবা শেখর মণ্ডল তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ডুমুরিয়া থানায় জানান।
এদিকে নিরবের বাবার সঙ্গে বাগবিতণ্ডার পর ওই ৫ স্কুলছাত্র শ্বাসরোধে নিরবকে হত্যা করে। এরপর দড়ি দিয়ে ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। 
ওসি আরও জানান, অভিযোগ পেয়ে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ মোবাইল নম্বর ট্রাকিং করে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে সোহেলকে আটক করে। 
এরপর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাত ১টার দিকে পরিত্যক্ত ওই বাড়ি থেকে নিরব মণ্ডলের মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ক্রাইম পেট্রোল দেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা আয়ের উদ্দেশে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেছিল ওই ৫ স্কুলছাত্র। সে অনুযায়ী নিরবকে আটকে রেখে তার বাবার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে বলে তারা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad