Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Advt 720

বীরভূমে ঋণের ফাঁদ চক্রঃ কখনো জমি বিক্রি, কখনো ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার নামে নিয়ে নেয় আধার, প্যান ও ছবি আর সাদা স্ট্যাম্প পেপারে সই

ভয়েস ৯ অন্তর্তদন্ত ২ 

ক্রাইম ডেস্ক, ভয়েস ৯ঃ বহু গ্রাহককে প্রতারিত করার পরও খোলাখুলি এই প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে একটি প্রতারণা চক্র। এরা একশ্রেণির বোকা ও নিরীহ মানুষকে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা ও জমি বিক্রির নামে ঋণের ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে চলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
সূত্রে জানা গেছে, এদের এক চক্রের বাড়ি বীরভূমের শান্তিনিকেতন কিংবা আশপাশ এলাকায়। যদিও এই সমস্ত মানুষ যে দূর্নীতি চক্রের সদস্য, তা সাদা চোখে চেনা সম্ভব নয়। কেননা এদের স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে পরিবার আছে। তবে, এদের জাল ছড়ানো আছে পার্শ্ববর্তী পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমানে। কিছু সহজ সরল, সমাজে পরিচিত ব্যক্তিকে এরা ‘চর’ হিসাবে কাজে লাগায়। 
এই ‘চর’ রা খবর নেয়, এলাকায় কে অর্থবান ও নির্বোধ মানুষ আছে। তারপর সময় সূযোগ বুঝে তাদের ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা ও জমি কেনার ব্যাপারে টোপ দেয়। এছাড়া, কিছু সরকারী সূযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার টোপও দেওয়া হয়। তারা রাজী হলেই ওই ‘চর’ খবরটা পৌঁছে দেয় চক্রের দালালদের কাছে। এরপর শুরু হয় ফোনে ফোনে কথা। 
এরকম টেপ ‘সংবাদ ভয়েস ৯’ এর হাতেও এসেছে। সেখানে এরা মোলায়েমভাবে যাকে ভবিষ্যতে ফাঁসাবে, তার সঙ্গে আলাপচারিতা শুরু করে।
এফডি ভাঙ্গিয়ে দেওয়া, স্ট্যাম্প পেপার কিনিয়ে জমি কেনার বন্দোবস্ত করা, গ্রামীন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া সব ধরণের কাজ করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে এরা পারিশ্রমিকটাও জানিয়ে দেয়। পারিশ্রমিক তথা ঘুষের টাকা এরা দুভাবে নেয় বলে জানা গেছে। একটা হল ক্যাশে, অন্যটা, স্ট্যাম্প পেপারে জমি কেনার নকল চূক্তি করে। আর এই জমির চূক্তি করার সম্য় এরা পাতে আর একটা ফাঁদ, যাতে, পরে এফ ডির টাকা না পেয়ে ঘুষের টাকা ফেরত চাইলে, বা পুলিশে বা আদালতে যেতে চাইলে, তাদের সেখানে যাওয়ার পথ বন্ধ রাখা যায়। 
 অভিযোগে ও গোপন টেপ থেকে জানা যাচ্ছে, এরা টোপে গাঁথা ব্যক্তির সঙ্গে সাদা স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়ে নেয়। নানা ভুল্ভাল বুঝিয়ে, এই সইগুলো করায়। তার আগে অ্যাকাউন্ট খোলার নামে এদের কাছ থেকে নিয়ে রাখে যাবতীয় প্রমানপত্র। 
এরপর সময়মতো, এই চক্রের দালালরা ওই ব্যক্তির কাছে ১০-২০ লক্ষ টাকা ধার নেওয়ার অভিযোগ তোলে। তারা ওই ব্যক্তিকে বলে, “তুমি আমার কাছ থেকে বেশ কয়েক ক্ষেপে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছো। তোমার সই করা স্ট্যাম্প পেপার আছে। যদি না দাও, তাহলে কোর্টে যাব।“
এইভাবে, পুলিশ-আদালতের ভয় দেখিয়ে এরা ওই ব্যক্তির সঙ্গে লক্ষাধিক টাকা আদায় করে নেয় বলে সূত্রে জানা গেছে। টেপের কথোপকথোন থেকে জানা যায়, এরা গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করানোর জন্য কাউকে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সাজিয়ে নিয়ে যায় স্ট্যাম্প পেপার কেনাতে। 
ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের ফেক মোবাইল নাম্বারে কথা বলিয়ে দেয়, যেখানে ওই ‘ব্যাঙ্ক ম্যানেজার’ বলে, “কোন চিন্তা নেই, আপনি টাকা পেয়ে যাবেন এফডির।“ দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি বহু মানুষকে ঠকালেও, পুলিশের কাছে এখনো কোন অভিযোগ জমা পড়েনি। 
কেননা, মিথ্যা ঋণে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় ও প্রাণনাশের ভয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভূক্তভোগী এ ব্যাপারে সিআইডি তদন্তের দাবি তুলেছেন। তারা মিডিয়ার মাধ্যমে সাইবার ক্রাইম বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন। 
কেননা, এই চক্রের ব্যাপারে এফডি জাল করা, নকল ব্যাঙ্ক মেসেজ পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। তাদের বক্তব্য, তারা সামনে এলে প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, এদের জাল অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে, এই ধরণের অপরাধ বাড়তে দিলে রাজ্যের পক্ষেই অসম্মান ও রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা কমে যাবে গ্রামের মানুষদের।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies