Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Advt 720

কয়লা সংকটে সাময়িক বন্ধ পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র


ভয়েস ৯,ঢাকা ব্যুরো: সারাদেশে দেখা দিয়েছে তীব্র লোডশেডিং। এরই মধ্যে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎকেন্দ্র। সম্প্রতি ডলার সংকটের কারণে কয়লার দাম দিতে না পারায় সাময়িকভাবে বন্ধ হলো দেশের বৃহত্তম তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। 
 শনিবার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম এ তথ্য জানান। অন্তত তিন সপ্তাহ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কার্যক্রম বন্ধ থাকতে পারে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, কয়লা না থাকায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুইটি ইউনিটের একটিতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ ছিলো। আরেকটিতেও বন্ধ হয়ে গেছে। বিসিপিসিএল সূত্রে জানা যায়, পূর্ণ সক্ষমতায় চললে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুইটি ইউনিট চালাতে প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হয়।
 বিসিপিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, কয়লা বাবদ এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা) বকেয়া হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে তারা যে পেমেন্ট করেছে, সেটি শোধ করার কথা ছিল এই এপ্রিলে। এপ্রিলে তারা এই টাকা দিতে পারেননি বলে জানান তিনি। তিনি জানান, এই বকেয়া বিল পরিশোধ না করা হলে সিএমসি আর কয়লা কেনার জন্য টাকা দেবে না। ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লাও কেনা সম্ভব হবে না। 
পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা কিনতে ঋণ দেয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি)। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত এই সংস্থা আর বাংলাদেশের নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ বিনিয়োগে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালে। চালু হওয়ার পর তিন বছরে একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তিনি আরও জানান, শুরু থেকেই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা কেনার দায়িত্ব সিএমসির ওপর ছিল বলে বলছিলেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল আলম। তারা কয়লা কেনার জন্য অর্থ দিয়ে থাকে এবং প্রতি ছয় মাস পরপর কয়লার টাকা আদায় করে। ডলার সংকটের কারণে কয়লার বকেয়া বিল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। সপ্তাহ দুয়েক আগে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে ডলারের কিছুটা সংকট থাকায় কয়লার টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। সেসময় তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন যে ‘সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই’ এই সমস্যার সমাধান হবে।

 বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল আলম জানান, চীনা প্রতিষ্ঠান সিএমসিকে এরই মধ্যে ৬০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকার ও তারা ইতোমধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার তাদের ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এরই মধ্যে ৬০ মিলিয়ন ডলার পেমেন্টও করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা কয়েকদিনের মধ্যেই সিএমসিকে কয়লা কেনার অর্থ দিতে রাজি করতে পারবেন বলে জানান তিনি। 
তিনি জানান, সিএমসির সাথে এ বিষয়ে আলোচনা শেষে কয়েক দিনের মধ্যেই তারা এলসি খুলতে পারবেন। এলসি খোলার পর জাহাজ যাবে, কয়লা লোড হবে, তারপর আসবে, আনলোড হবে– সব মিলিয়ে কমপক্ষে ২৫ দিন লাগবে। পিডিবির পরিচালক (জনসংযোগ) শামীম হাসান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিদিন গড় বিদ্যুতের চাহিদা ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। এর বিপরীতে গড়ে প্রতিদিন ১২ থেকে সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। 
তিনি জানান, চালু হওয়ার পর থেকে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র গত তিন বছর এর পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। তাই এই কেন্দ্রটি বন্ধ থাকলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন। তিনি আরও জানান, উৎপাদন বন্ধের পর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যেসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, সেসব এলাকায় অপেক্ষাকৃত বেশি চাপ পড়তে পারে। আবার ভারসাম্য রক্ষা করতে সারা দেশেও লোডশেডিংয়ের মাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies