অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে গ্রেফতার স্বামী

বিশ্বজিৎ মন্ডল,বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ে শাপলা আক্তার (২০) নামে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃবধূকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর, শ্বাশুরী, স্বামী ও স্বামীর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। নিহত শাপলা আক্তার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পদমপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে। স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা যায় যে, শাপলা তার বাবা-মা'য়ের সাথ ঢাকায় থাকতো। সেখানে শাপলার গ্রামের পাশের কাঁচনা নামক গ্রামের আঃ খালেকের ছেলে ফয়সাল হোসেনের তার পরিচয় হয়। সেই সুবাদে গত বছর ঢাকায় কর্মরত অবস্থায় ফয়সাল শাপলাকে বিয়ে করে। ছেলের পরিবার বিষয়টি তখন মেনে নেয়নি। এরই মধ্যে ১৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা হয় শাপলা। এ অবস্থায় কোরবানি ঈদের কথা বলে ৯ জুলাই শনিবার শাপলাকে তার শশুর বাড়িতে নিয়ে যায় স্বামী ফয়সাল। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির দরজায় পা দিতেই ঈদের আগের দিন রাত দুটোয় লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে শাপলাকে মারধর শুরু করেন তার শ্বশুর,শ্বাশুরী ও স্বামীসহ তার স্বামীর বাড়ির লোকজন। এ সময় শাপলার পেটেও একের পর এক লাথি মারা হলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সেখানকার এক প্রতিবেশী শাপলাকে উদ্ধার করে তার মামার বাড়িতে দিয়ে যায়। ১১ জুলাই সোমবার সকালে শাপলা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথেই শাপলার মৃত্যু হয়। শাপলার লাশ তার বাবার বাড়ি নিয়ে এসে গোসল দেওয়ার সময় মহিলারা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেলে তার বাবাকে জানান। পরে তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। এলাকাবাসীরা দাবী করে বলেন, শাপলা তাদের এলাকার একজন অত্যন্ত ভদ্র,নম্র মেয়ে ছিলেন। স্বামীর বাড়িতে ঈদের আনন্দে প্রথম পা রাখতেই কি কারনে শাপলাকে তার শ্বশুর,শ্বাশুরী ও স্বামীসহ অন্যদের দ্বারা এই পাশবিক নির্যাতন ভোগ করতে হলো। যে নির্যাতনের ফলে শাপলা এবং তার গর্ভস্থ সন্তানকে জীবন দিতে হলো। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষকলীগের আহবায়ক ও ভাউলারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ পবারুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীদের কথার সাথেও তিনি সহমত প্রকাশ করছেন। এই শাপলা ও তার গর্ভস্থ সন্তানকে যারা অত্যাচার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে ঐ সমস্ত অত্যাচারী মানুষরুপী হায়েনাদের দ্রুত গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করে তিনি তাদের ফাঁসি রায় দাবি করেন। ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে দ্রুত এসে শাপলার লাশের সুরতহাল ও প্রাথমিক তদন্ত সম্পন্ন করি। সেখানে তার স্বামী ফয়সালকে পেয়ে গ্রেফতারও করি। মৃত্যুর কারন ও অধিকতর নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য শাপলার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad