সাধারণ মানুষের বিনীত প্রশ্নঃ টিকার সার্টিফিকেট থাকলে কি তিনি করোনায় আক্রান্ত হবেন না, বা ভিড়ের মধ্যে করোনা ছড়াতে পারবেন না?

ভয়েস ৯ ডেস্ক,কলকাতাঃ সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, যারা টিকার ২ টি বা বুস্টার ডোজ নিয়েছেন, তারা করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন কি? কিংবা তারা করোনায় আক্রান্ত হলে করোনা ভাইরাসকে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারেন কি না? কারণ, সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, অনেকেই বলছেন সভা-সমাবেশ স্থলে আসার আগে দেখে নেওয়া প্রয়োজন তাদের টিকাকরণ হয়েছে কিনা? এ কথার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই জনগণের সামনে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নতুন তথ্য বলছে, একজন সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তি যিনি ব্রেকথ্রু ইনফেকশনের সম্মুখীন,তিনি টিকা না নেওয়া ব্যক্তির মতোই ভাইরাসটি ছড়াতে পারেন। বিবিসি নিউজের মতে, এমনকি যদি তাদের খুব কম বা কোনও লক্ষণ নাও থাকে, তবে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে টিকা নেওয়া ব্যক্তিরা সহজেই ভাইরাসটি প্রেরণ করতে পারেন। তারা টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের মতো একই পিক ভাইরাল লোড বহন করতে পারে। এরকম বহু খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, টিকা নেওয়া এমনকি, বুস্টার নেওয়া ব্যক্তিরাও বার বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারাও গেছেন। এদের সকলের কাছেই টিকাকরণের সার্টিফিকেট আছে। এখন যদি করোনা পরীক্ষা না করে শুধু সার্টিফিকেট দেখেই ওদের সভা-মিছিলে যেতে দেওয়া হত, তাহলে কী হত। সাধারণ মানুষ এই প্রশ্ন তুলছেন। সার্টিফিকেট আছে, কিন্তু করোনায় আক্রান্ত। বাইরে উপসর্গ নেই, তাহলে এদের আপনি চিনবেন কীভাবে? এদের নিরাপদ ভাববেন কীভাবে? এটা কি সত্যিই করোনা নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত ভাবনা? প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। বিবিসি নিউজ এ প্রকাশিত খবর অনুসারে, ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা (চিকিৎসক নন) এর আগে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, যারা টিকা হীন, তারা যেন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য তাদের চারপাশের টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ওপর নির্ভর না করে। যদিও ভ্যাকসিনগুলি গুরুতর অসুস্থতা এবং মৃত্যু প্রতিরোধে দুর্দান্ত কাজ করে, তবে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য সেগুলি তৈরি করা হয়নি। এবং সময়ের সাথে সাথে, বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে তাদের কার্যকারিতা হ্রাস পেয়েছে।
অনেকে বলেছেন, সম্প্রতি করোনার বাড়বাড়ন্তের আগে বেশ কয়েক মাস ধরে মানুষজন ভিড়ের মধ্যেই যাতায়াত করতেন। ট্রেন-বাস, বাজার-দোকান-অফিস, রাস্তাঘাট সর্বত্রই ভিড় ছিল বিগত কয়েকমাস ধরেই। তখন কিন্তু করোনা সেভাবে ছড়ায় নি। অনেকে বলবেন, ভিড়ে মানুষ মেলামেশা করেছিল বলেই এখন বাড়ছে। প্রশ্ন হল, করোনার ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পর কতদিন পর উপসর্গ প্রকাশ পায়? এক মাস, না দু মাস? না কি ৫-৬ দিন? এটাও সাধারণের জানার ইচ্ছা? তাদের আরও বেশ কয়েকটা প্রশ্ন আছে, যেভাবে মাস্ক ব্যবহার করা হয়, বা হচ্ছে, তাতে কি ভাইরাস আটকানো যায়? কেউ কেউ বলেছেন, আগে বলা হত, টিকা নিলে বা ডোজ সম্পূর্ণ করলে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে না। কিন্তু তথ্য বলছে, টিকার একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে। তাহলে সত্য কী? টিকাপ্রাপ্ত মানুষ কি করোনা ছড়াতে পারে? না কি পারে না? আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভাইরাসের সঙ্গে সহাবস্থান শিখে গেছে। শরীরও ভাইরাসকে মেনে নিয়েছে। যাদের ইমিউনিটি আছে, তাদের অনেকেই ভাইরাস আক্রান্ত মানুষজনের মধ্যে থেকেও আক্রান্ত হননি। এরকম প্রচুর উদাহরণ আছে। এদের মধ্যে অনেকেই টিকা নেননি। এ সব কথাই সাধারণ মানুষের। তারা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই এ কথাগুলো বলেছেন। টিকাকরন প্রয়োজন, কিন্তু এ নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত প্রচার প্রয়োজন। সুপ্রীম কোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, মানুষ ও ডাক্তারদের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের বিরূপ ঘটনা নিয়ে জনসমক্ষে রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু বহু তথ্যই জানা যাচ্ছে না। আসলে, যাদের কোমর্বিডি রয়েছে, বা যাদের ইমিউনিটি কম, তারা অতি সহজেই ভাইরাস আক্রান্ত হতে পারেন। বিজ্ঞানীদের মত।কাজেই টিকার সার্টিফিকেট থাকা বা না থাকাটা ফ্যাক্ট কি? প্রশ্ন জনগণের। তার চেয়ে করোনা পরীক্ষা করে নেওয়াটাই বেশি যুক্তিপূর্ণ। কাজেই ভিড় হবে বলে, শুধু টিকার সার্টফিকেট দেখে ছেড়ে দিলে বিষয়টাই অবৈজ্ঞানীক হবে। দেখা যাবে, সার্টিফিকেট আছে, কিন্তু অনেকেই করোনায় আক্রান্ত। সবার অজান্তে তারাও ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে চলে আসবে। চিনবেন কীভাবে? কথাগুলো এক চিকিৎসকের। তার কথা ভাইরাস জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত হচ্ছে, তাদের নানা ভ্যারিয়েন্ট আসছে। তাই টিকাকে সময়োপযোগী করতে হবে। আত্মসন্তুষ্টির কোনো জায়গা নেই।
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad