প্রেমের টানে ভারত থেকে বাংলাদেশ : এক নয়া ফেসবুক প্রেমকহানী

বিশ্বজিৎ মন্ডল, বরিশাল অফিস, ঢাকা: প্রেমের টানে ভারতের তামিলনাড়ু থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছিলেন নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার এবং নৃত্যশিল্পী প্রেমকান্ত। বাংলাদেশে আসার পর বরিশালে একবার দেখাও হয়েছিল বরগুনার তালতলী উপজেলার ওই কলেজপড়ুয়া প্রেমিকার সঙ্গে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেম ধরা দেয়নি প্রেমকান্তের কাছে। প্রেমিকার দেখা পেতে পুরো এক সপ্তাহ চষে বেড়িয়েছেন বরিশাল নগরীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। 

আপ্রেমকান্তের অভিযোগ, মেয়েটির অন্য প্রেমিকের হাতেও মার খেতে হয়েছে তাকে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় টাকা-পয়সাও। পরে মেয়েটির দেখা পেতে দ্বারস্থ হয়েছেন বরিশাল নগর পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীদেরও। পুলিশ হেফাজতেও থেকেছেন। কিন্তু প্রেমিকার দেখা না মেলায় অবশেষে ভগ্ন হৃদয়ে নিজ দেশে ফিরে গেছেন তিনি। প্রেমকান্ত পুলিশ ও গণ্যমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার নাচ দেখে প্রেমে মজেন বাংলাদেশের মেয়েটি। আর প্রেমকান্তের ভিডিওতে প্রতিনিয়ত লাইক-কমেন্টও করতে থাকেন তিনি।

 ২০১৯ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় ও ভাবের আদান-প্রদান শুরু হয়। সম্পর্ক আরো গভীর হলে টানা তিন বছর ধরে চলে প্রেম। এমনকি উভয় পরিবারের মাঝেও গড়ে ওঠে সুসম্পর্ক। করোনার বাধা কাটিয়ে প্রেমকান্ত ওই কিশোরীকে দেখতে গত ২৪ জুলাই ছুটে আসেন বরিশাল নগরীতে। পরের দিন ২৫ জুলাই একটি রেস্টুরেন্টে দুজনের দেখাও হয়। এরপর ঘটনার মোড় উল্টো দিকে ঘুরে যায়। দেখা হওয়ার এক দিন পর প্রেমকান্ত জানতে পারেন, আরেক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে মেয়েটির। হঠাৎ প্রেমিকা প্রেমকান্তের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। প্রেমকান্তের অভিযোগ, মেয়েটির অন্য প্রেমিকের হাতেও মার খেতে হয়েছে তাকে। ছিনিয়ে নেওয়া হয় টাকা-পয়সাও। দুই দিন-দুই রাত কাটাতে হয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানা পুলিশের হেফাজতে। 

 এয়ারপোর্ট থানার ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, লোকমুখে খবর পেয়ে তামিলনাড়ুর ওই যুবককে নথুল্লাবাদ থেকে গত মাসের ৩০ তারিখ (সোমবার) থানায় নিয়ে আসি। যেহেতু তিনি বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছেন, তাই বিদেশিদের পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে তার নিরাপত্তার স্বার্থে দুই দিন থানায় রাখা হয়েছে। এ সময় পুরো ঘটনা তিনি আমাদের খুলে বলেছেন। পরে বিষয়টি ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের জানাই। হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ওই ছেলেটির সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, যে মেয়েটির সঙ্গে ওই যুবক তার প্রেমের সম্পর্কের কথা বলছেন, সে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বাংলাদেশের আইন সম্পর্কে প্রেমকান্তকে অবহিত করেন।

 তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ছেলেটি নিজ দায়িত্বে ভারতে চলে যাওয়ার কথা বললে সোমবার ঢাকার একটি বাসে উঠিয়ে দিই। ওসি আরো বলেন, এত সবের পরও প্রেমকান্তের বিশ্বাস ছিল দ্বিতীয়বার দেখা হলে ওই কিশোরী হয়তো তার জীবনে ফিরে আসত। ভারতের তামিলনাড়ুতে ফিরে যাওয়ার আগে প্রেমকান্তের প্রবল আগ্রহ ছিল আর একটিবার মেয়েটির দেখা পাওয়ার। কিন্তু সেটি আর সম্ভব হলো না।
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad