বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত বগুড়ার মিষ্টি দই আজও মাতিয়ে রেখেছে বাঙালিকে

বিশ্বজিৎ মন্ডল, ঢাকাঃ "দই নেবেন গো দই, ভালো দই আছে," এমন হাঁক ডাক ছেড়ে এককালে, গ্রাম বাঙলার মেঠোপথ ধরে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে দই বিক্রি করতো ঘোষ সম্প্রদায়ের লোকজনেরা, এখন আর সেই ফেরি করে দই বিক্রির দৃশ্য এখন চোখে খুবই কম পরে। সেই ফেরি করে দই বিক্রির দৃশ্য এখন স্থান করে নিয়েছে শহরের আলোক সজ্জায় সজ্জিত নামিদামি শোরুমে। গুণে, মানে ও স্বাদের কারণে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি গাবতলী উপজেলার কাগইল, শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলাসহ এই মিষ্টি দই উৎপাদন হচ্ছে। এই মিষ্টি দইয়ের সুখ্যাতি দেশ এবং দেশের বাইরে রয়েছে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ এই জেলায় বেড়াতে এলে দইয়ের স্বাদ আস্বাদন করা যেন চাই-ই চাই। আবার এখান থেকে বাইরে গেলেও তার সঙ্গী হয়, বগুড়ার মিষ্টি দই। এছাড়াও ঈদ, পূজা, বিয়ে, জন্মদিন, আকিকা, হালখাতাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দই যেন অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। এ অঞ্চলে অতিথি আপ্যায়নের তালিকায় দইয়ের নাম থাকাটা ঐতিহ্যের অংশও বটে। এখানকার উৎপাদিত দই স্বাদে মানে অনন্য হওয়ায় বগুড়ার দই শব্দটি যেন একে অন্যের সমার্থক হয়ে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখানে বেড়েছে দইয়ের চাহিদা, জনপ্রিয়তা, উৎপাদন ও বিপণন। বর্তমানে দই তৈরির প্রক্রিয়ায়ও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ঐতিহাসিক যুগে ঘোষ সম্প্রদায়ের লোকজন বগুড়া জেলার শেরপুর পৌরশহরের ঘোষপাড়ায় এই শিল্পের সূচনা করেন। ঘোষেদের সেই সুস্বাদু দই তৈরির ফরমুলা বা প্রস্তুত প্রণালি বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অনেকের হাতেই পৌঁছে গেছে। এতোদিনেও বগুড়ার দইয়ের স্বাদ ও সুনামে চির ধরাতে পারেনি কেউ। তার দাবি, বগুড়ার মতো এতো সুস্বাদু ও মানসম্পন্ন দই দেশের কোথাও তৈরি হয় না। কেননা এখানকার আবহাওয়া দই তৈরির জন্য অত্যন্ত উৎকৃষ্ট। পানিও বেশ পরিশোধিত সবমিলে দক্ষ কারিগর ও তাদের নিপুণ হাতের যাদুকরি ছোঁয়ায় তৈরি হয় বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী সু-স্বাদু মিষ্টি দই।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad