বঙ্গাইগাও এর ওই ক্লাবের পক্ষ থেকে তারক নাথ ঘোষ জানালেন, তাদের ক্লাবের পুজো এবার ৫৯ বছরে পদার্পণ করেছে। ‘এবারে প্রথম থেকেই ইচ্ছা ছিল নতুন কিছু করার। দেখলাম, অযোধ্যায় রাম-মন্দির শেষ হতে আরো সময় লাগবে, তাই আমরা ওই রাম-মন্দিরের আদলে এখানে মন্ডপ বানালাম। শহরের বাসিন্দারা এই মন্ডপ দেখে খুশি।‘ তারকবাবু জানালেন।
প্রতিমার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তারকবাবু জানান, মা দুর্গাকে সকলেই দশ-প্রহরেণধারিণী রূপেই দেখতে অভ্যস্ত। আমাদের হিন্দু শাস্ত্রও সেভাবেই দেখিয়েছে। কিন্তু, আমরা মাকে দেখাতে চেয়েছি শান্তিরূপিনী হিসাবে। তাই তার দশ হাতে অস্ত্র নেই, আছে আশীর্বাদ।
প্রতি বছর আসামের বিভিন্ন জেলায় দুর্গাপুজো প্যান্ডেলের মধ্যে একটা বৈচিত্র দেখা যায়। এখানকার বাঙালিদের মধ্যে যেমন পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা বাঙালিরা আছেন, তেমনই দেশভাগের পর ওপার বাংলা থেকে আসা বহু বাঙালি পরিবার বংশানুক্রমে এখানে বাস করেন। আর বাঙালি যেখানে, সেখানেই দুর্গাপুজো। পুজো উপলক্ষে, ঘুরছি আসামের দিশপুর অর্থাৎ রাজধানী। অবশ্য দিশউরের চেয়ে গুয়াহাটিকেই অনেকে এখনো মনে করেন আসামের রাজধানী। কথাগুলো বলছিলেন এখানকার এক বাঙালি। গুয়াহাটি স্টেশনের বাইরে তারকেশ্বর বস্ত্রালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল তার সঙ্গে। একসম্য থাকতেন নৈহাটিতে। তারপর ব্যবসা সূত্রে আসাম। চায়ের ব্যবসা করেন। নৈহাটিতেও দোকান আছে। তিনি বললেন, এখানকার বাঙালিদের কাছে সরস্বতী ও দুর্গাপুজো বেশ জনপ্রিয়। আপনি যদি প্যান্ডেল্গুলোতে যান, কোন তফাৎ পাবেন না পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুজোর সঙ্গে। আসলে, কী জানেন, এই পুজোটা এমন একটা পুজো যা সব বাঙালিকে একসূত্রে বেঁধে ফেলে।
এবারে, রাজধানীর সার্বজনীন পূজা কমিটি পশ্চিমবঙ্গের একটি গ্রামের থিম করেছে। মন্ডপের দেয়ালে, বাংলা ও আসামের সংস্কৃতির মেলবন্ধন। মন্ডপের গায়ে বিহু-নৃত্যশিল্পী, ভগবান বিষ্ণু এবং দেবী দুর্গার চিত্র।