তবে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “একজনের আনন্দ যেন অন্যের দুঃখের কারণ না হয়।“ প্রশ্ন হলো, পুলিশ কানে নেবে তো সে কথাটা? বললেন এক বয়স্ক মহিলার। তিনি থাকেন রিষড়াতে। বাজির আওয়াজে কষ্ট হয়। এবার হাইকোর্টের আদেশই তার ভরসা।
তবে, কলকাতা পুলিশ, শিলিগুড়ি পুলিশ,বীরভূম পুলিশ, উত্তর ২৪ পরগণা পুলিশ এবারে ব্যপক ধরপাকড় চালাচ্ছে, আটক করছে বেআইনি বাজিও। গতকাল গোপালনগর থানা এলাকার এক ব্যবসায়ীকে গ্রপ্তার করা হয় নিষিদ্ধ বাজি মুজুত ও বিক্রি করার অভিযোগে।
বিজ্ঞানীরা সবসময়ই বলে আসছেন যে আতশবাজি কোনোভাবেই কম ক্ষতিকারক নয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডও (ডব্লিউবিপিসিবি) চাইছে, 'গ্রিন ক্র্যাকার'-ও যেন সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে। মনে রাখতে হবে, নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে উচ্চ-ডেসিবেল শব্দ তৈরি করে এমন আতশবাজি বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয় না। আতশবাজিতে লিথিয়াম, আর্সেনিক, অ্যান্টিমনি, সীসা এবং পারদ-এর মতো বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গেলে প্রস্তুতকারক লাইসেন্স হারাবে। অনলাইনে ক্র্যাকার বিক্রিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বাজি ব্যবসায়ীরা এখনো পর্যন্ত দমকলের ছাড়পত্র পায়নি, শুরু হয়নি ছাড়পত্র নবীকরণের প্রক্রিয়া। ফলে, এবছর কালীপুজোয় বাজি বাজার বসার ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। আদালতের নির্দেশ মতো কলকাতা পুলিশ বাজি ব্যবসায়ীদের শুধুমাত্র সবুজ বাজি বিক্রির ছাড়পত্র দিয়ে বাজার শুরুর অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু, এখনো ‘ফায়ার লাইসেন্স’ নিয়ে জটিলতা কাটেনি। বিগত বছরগুলির মতো কলকাতার শহিদ মিনার ও বিজয়গড়ে এবার বাজির বাজার বসবে না। এ বছর কলকাতা পুলিশের তত্ত্বাবধানে টালা, বেহালা এবং কালিকাপুরে বসতে চলেছে বাজি বাজার।
কী এই 'সবুজ বাজি'?
গ্রিন ক্র্যাকার বা 'সবুজ বাজি'গুলি পরিবেশবান্ধব আতশবাজি এবং চলতি আতশবাজির মতো দূষণ সৃষ্টি করে না,বরং বায়ু দূষণ হ্রাস করতে পারে। এগুলি কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর) দ্বারা পরীক্ষিত।
সবুজ আতশবাজি পরিবেশ-বান্ধব; এবং প্রচলিত দূষণের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম দূষণ ঘটায়। তারা ১১০-১২৫ ডেসিবেলের শব্দমাত্রার চেয়ে কম শব্দ তৈরি করে। এই দীপাবলিতে কিছু রাজ্য - যেমন পশ্চিমবঙ্গ কেবল সেগুলি ক্রয়ের অনুমতি দিচ্ছে। গ্রিন ক্র্যাকারগুলি সালফার নাইট্রেটস, আর্সেনিক, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, সীসা এবং বেরিয়ামের মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক থেকে মুক্ত।