ডেঙ্গু এই রাজ্যের বুকে নতুন ঘটনা নয়, অথচ ডেঙ্গু নিয়ে ততটা গুরুত্ব কি দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। করোনার টিকা আনিষ্কার হয়ে গেল, কিন্তু ডেঙ্গু সমস্যা সেই একই তিমিরে। দায় শুধু একা নাগরিকদের নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানী, কেন্দ্রিয় সরকার, রাজ্য সরকার, স্থানীয় পুরসভা ও পঞ্চায়েতের। অভিযোগ, হুগলি জেলার স্কুলগুলিতে মশার দাপট বাড়ছে, ক্লাশরুমে বনবন করে উড়ছে মশা। আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী ও সন্তান ডেঙ্গি আক্রান্ত।
কিন্তু সমস্যা যেটা, সেটা হলো, এই রোগের ভাইরাস রূপ পরিবর্তন করে সমস্যাকে আরো জটিল করে তুলছে দিনকে দিন। রাজ্যে ডেঙ্গু গত ২০২০-২০২১ এ ও ছিল। কিন্তু করোনা সামলাতে গিয়ে চাপা পড়ে ছিল ডেঙ্গু সংক্রান্ত যাবতীয় পরিসংখ্যান। এমনকি, একশ্রেণির মিডিয়া লাইনে লাইনে করোনার টিকা নিয়ে যতটা প্রচার করেছে, ডেঙ্গু নিয়ে তারা অত শব্দ ব্যয় করেনি বলে অভিযোগ মানুষের।
তাদের মতে, মুখে মাস্ক দিয়ে না হয়, করোনাকে আটকানো গেল, কিন্তু গ্রাম-শরের লাখো লাখো মশাকে এড়াবেন কীভাবে?
রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হুগলিতে ডেঙ্গুর দাপট। ইতিমধ্যেই এই জেলায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। পরিসংখ্যান বলছে জেলায় এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজারের বেশি। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৬০০ চাড়িয়েছে। উত্তরপাড়া ও শ্রীরামপুর পৌরসভায় মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারেও বেশি। ডেঙ্গুর সংক্রমণ শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলগুলিতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
হুগলির গ্রামীণ অঞ্চলের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২৭২ জন। স্বাস্থ্য দপ্তর জানাচ্ছে, জেলার উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর ও রিষড়ায় ডেঙ্গি আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি। ইতিমধ্যেই এই এলাকায় ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে চন্দননগর, ডানকুনি, ভদ্রেশ্বর এলাকায়। শহরের পাশাপাশি গ্রামেও বাড়ছে দাপট। শুধু সাধারণ মানুষ নন, আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী ও সন্তান ডেঙ্গি আক্রান্ত। তাদের চিকিতসা হচ্ছে একটি বেসরকারী হাসপাতালে।
হুগলি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, মগরা, ব্যান্ডে্ কোদালিয়া ১, চন্ডীতলা১, জাঙ্গিপাড়া, খানাকুল২, পোলবার রাজহাট সুগন্ধা, বলাগরের জিরাট, এই গ্রাম-পঞ্চায়েতগুলিতে পজিটিভ কেস বাড়ছে।
শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান গিরিধারী সাহা বলেন, “আমাদের কর্মীরা দিনিরাত কজ করছেন। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়া ও সচেতন থাকার বার্তা প্রচার করা হচ্ছে, যাতে জল জমতে না দেওয়া হয়। ডেঙ্গি মরসুমি ব্যাপার, শীত বাড়লেই কমে যাবে। যেসব ওয়ার্ড বেশি আক্রান্ত সেই এলাকায় ফিভার ক্যাম্প করা হচ্ছে। বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে।“
তবে, ডেঙ্গু নিয়ে পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলির আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসীরা। মশা মারা কীটনাশক ঠিকঠাক ছড়ানো হচ্ছে কি না, না কি শুধু ‘ছবি তোলার’ জন্যে ছড়ানো হচ্ছে, সেটা স্বাস্থ্য-দপ্তরের দেখা প্রয়জন। ্শানাশকের গুণমান ঠিক আছে কি না, সে ব্যাপারেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন, নইলে জল ছড়ানো হচ্ছে, না মশা-নাশক, সেটা বোঝা যাবে না। কথাগুলো বললেন হরিপালের কিছু বাসিন্দা। এদিকে রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার পেরিয়ে গেছে, তাই উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্য জুড়েই।
উত্তরপাড়া - ১২৪১, একটিভ কেস - ৮৮রিষড়া - ৬১৭, অ্যাক্টিভ কেস- ৭২শ্রীরামপুর - ১২০৮ , একটিভ কেস - ১৮৩মগরা - ১৫৯ , এক্টিভ কেস- ২৩ সিঙ্গুর - ১১৩, এক্টিভ কেস - ১৯শ্রীরামপুর উত্তরপাড়া গ্রামীন - ১৪৫, এক্টিভ কেস -১৫চন্ডীতলা ১- ৭০, একটিভ কেস ১৪