অখিল গিরির মন্তব্য নিয়ে মামলা দায়েরের অনুমতি কলকাতা হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দেশের রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধেরাজ্যের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরির কু-মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সারা ভারতের সঙ্গে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী সমাজের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশঃ তীব্র হয়ে উঠছে। তাকে নিয়ে তার দল তৃণমূল কী করবে, সেই অপেক্ষায় না থেকে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন এক আইনজীব সুস্মিতা সাহাদত্ত।
 তিনি আবেদনে বলেছেন, দেশের একজন সর্বোচ্চ সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে এই ধরণের মন্তব্য করা যায় না, অথচ, তার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।
সুস্মিতাদেবীর আবেদন, এখনো পর্যন্ত সরকারীভাবে এমন কিছু বলা হয়নি, যা দেখে মনে করা যেতে পারে সরকার অখিল গিরির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বা যাবে। 
এরকম পরিস্থিতিতে তাই তিনি আদালতের কাছে আবেদনে বলেছেন, আদালত যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। জানা গেছে, এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন। আগামিকাল হয়তো এ ব্যাপারে শুনানী শুরু হতে পারে।
এই মুহুর্তে ভারত সহ পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় যে ব্যক্তিকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল দলের ভিতরে ও বিরোধী দলের মধ্যে রাজনৈতিক চর্চা বেশি হচ্ছে তিনি পশ্চিমঙ্গের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরি। ওড়িশার প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমে বার বার দেখানো হয়েছে, তার সেই অঙ্গভঙ্গী সহকারে রাষ্ট্রপতির প্রতি অসম্মানজনক ভাষা প্রয়োগের দৃশ্য। 
 ওড়িশার বিজেপি নেতৃবৃন্দ সহ সাধারণ মানুষ তীব্র ভাষায় নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের এই মন্ত্রীকে। একইসঙ্গে তারা অপেক্ষা করে আছেন, প্রতিবেশী রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেন, সেটা দেখার জন্য। একইসঙ্গে, তারা বলেছেন, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও তৃণমূলের অখিল গিরি, দুজনেই রাজনীতির মানুষ, কিন্তু রাষ্ট্রপতি নন। 
তিনি দেশের সাংবিধানিক প্রধান। তাহলে তাকে রাজনীতির বৃত্তে টেনে আনার কারণ কি? সেটা কি শুধু উপমা দেওয়ার জন্য, না কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। তার উত্তর চান তারা। ওড়িশাবাসীদের ক্ষোভের আর একটি কারণ হলো মহামান্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাদের ঘরের মেয়ে। তাই অসম্মানটা আরো বেশি করে বাজছে তাদের মনে। বদলে যাচ্ছে বাঙালিদের প্রতি তাদের ধারণা। 
ভুবনেশ্বরে বহু বাঙালি সাংবাদিককেও তারা প্রশ্ন করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীর এই ধরণের শালীনতাবোধের অভাব নিয়ে। এই মুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির হাওয়া গরম। একদিকে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম সহ আদিবাসী সমাজের একটা বিরাট অংশ অখিল গিরির পদত্যাগ ও গ্রেপ্তার চাইছেন। রাজ্যের বহু ও দিল্লির থানায় তার নামে এফআইআর করা হয়েছে। 
গত ৪৮ ঘন্টা ধরে লাগাতার চলছে বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল। অন্যদিকে, রাজ্যের শাসক দলের অভ্যন্তরেও ক্ষোভ রয়েছে অখিল গিরির এই কান্ডজ্ঞানশূন্য অশালীন বক্তব্যে। তারাও অপেক্ষা করে আছেন দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কী ব্যবস্থা নেন, সেদিকেই।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad