সংবাদ টেলিভিশনের ইউ টিউব চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্ট, নতুন প্রজন্মের ভোটারদের কথা-বার্তা, রাজনৈতিক খবর সম্পর্কে উদাসীনতা, এক ভিন্ন ইঙ্গিত দিচ্ছে রাজ্যের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলিকে।
বাস্তবে ঘটা প্রকাশিত সত্যকে যখন মিথ্যা প্রমান করার যুক্তিহীন প্রয়াস চলে, তা দেখে তিতিবিরক্ত নতুন প্রজন্মের নাগরিকরা। ইউ টিউব চ্যানেলে প্রদর্শিত সংবাদ চ্যানেলের কমেন্ট বক্সে তাদের পোস্টগুলো দেখলে বোঝা যায়, তারা অনেক বেশি রাজনৈতিকভাবে সচেতন। পাশাপাশি, তাদের পোস্ট আর একটা বিষয় ইঙ্গিত করে, তারা নেতাদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ, স্বচ্ছ রাজনীতি ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী আশা করেন। প্যানেলে বসে ‘সামনে ঝগড়া’ আর ‘আড়ালে গলাগলি’ তারা পছন্দ করছেন না।
তাদের অনেকের বক্তব্য, “রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেলেই আসে ব্যক্তিগত কুৎসা আর কু-কথা। রাজনীতির লড়াই রাজনৈতিকভাবে আজকাল আর করা হচ্ছে না, তাই আমরা ইউটিউব এ ‘রিল’ বানাতেই বেশি ভালোবাসি।“
আর একটি বিষয় আছে, আমাদের রাজ্যের গ্রামগুলিতে মানুষে মানুষে এক ভালোবাসার সহবস্থান ছিল, কিন্তু রাজনীতির ভিন্ন প্রয়োগে এই বন্ধনের শক্তি ক্রমশঃ আলগা হচ্ছে। ছাত্রদের বন্ধুত্বে বাধা হচ্ছে রাজনীতির রঙ।
গ্রামের রাজনীতি সচেতন অথচ কোনোরকম দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন পাঠক ও দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা বাস্তবে যা দেখেন, সেটা বিশ্বাস করেন। কাগজে নেতাদের বক্তব্য, পালটা বক্তব্যে তাদের আস্থা নেই। গ্রামের ঘটনা অনেকসময় নেতারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন, এটাও তারা বোঝেন। তাদের বক্তব্য, যারা গ্রামে বাস করেন, তারা জানেন, কোথায় ঠিক কী হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, পুকুরের ধারে বসে থাকা সব পাখি মাছ খায়, দোষ হয় মাছরাঙ্গার।
অনেকেই তিতিবিরক্ত, খবরের কাগজ বা নিউজ টিভির রাজনীতির খবরে। তারা পাতা উলটে ভালো খবর খোঁজেন, সিনেমার পাতা , খেলার পাতা দেখেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম। এমনিতেই বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী খবরের কাগজ নিয়মিত পড়েন না, পড়লেও খেলার পাতা বা বিনোদনের পাতা পড়েন, অনেকে বিজ্ঞানের পাতা বা অন্যান্য পাতা পড়েন, কিন্তু রাজনৈতিক খবরে আগ্রহ নেই।
নিউজ টিভিতে সারাদিন ধরে রাজনীতির কুশীলবদের একঘেয়ে চিৎকার আর নেতাদের কটুক্তি শুনে শুনে তাদের কান ঝালাপালা। রাজ্যের উন্নতি নয়, ব্যক্তিগত উন্নতি নিয়ে তরজা আর পালটা তরজায় তারা দিশেহারা, তাই খবর বদলে যায় সিরিয়ালে বা সিনেমায়, খেলা বা মজার মজার শোতে।