চলছে তারকেশ্বর মন্দিরে বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা। রাত হলেই আকাশ আলোকিত হবে আতসবাজির রঙ্গিন আলোয়। আর শিব-দূর্গার সেই বিবাহে বরযাত্রী হবেন এই গাজন সন্ন্যাসীরা।
জানা যায়, নীলসন্ন্যাসীরা একইরকম লাল কাপড় পরে পাগড়ি মাথায়, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ও হাতে ত্রিশূল নিয়ে নীলকে সঙ্গে করে এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। সঙ্গে থাকে ঢাক-ঢোল, বাঁশী বাজনদারের দল এবং শিব-দুর্গার সাজে ‘সঙ’ সেজে শহর পরিক্রমা করেন সন্ন্যাসীরা।
গৃহস্থ মহিলারা উঠানে আল্পনা দিয়ে নীলকে আহ্বান করে বরাসনে বসিয়ে তার মাথায় তেলসিঁদুর পরিয়ে দেন। এরপর নীলের গান শুরু হয়:
“শুন সবে মন দিয়ে হইবে শিবের বিয়ে
কৈলাসেতে হবে অধিবাস।
পুরাণ থেকে জানা যায়, দেবাদিদেব মহাদেবের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নীলাবতীর। দক্ষযজ্ঞে দেহত্যাগের পর শিবের পত্নী সতী পুনরায় জন্মগ্রহণ করেন নীলধ্বজ রাজার ঘরে। রাজা তাঁকে লালন পালন করেন। তারপর সুন্দরী কন্যার বিয়ে দেন শিবের সঙ্গে।
নীলাবতী শিবকে মোহিত করে পরে মক্ষিপা রূপ ধরে ফুলের সঙ্গে জলে নিক্ষিপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। রাজা-রাণীও শোকে প্রাণবিসর্জন দেন। শিব ও নীলাবতীরই বিবাহ-অনুষ্ঠানের লৌকিক স্মৃতিচিহ্ন বহন করে এই নীলপুজো।
এদিন, এই বাংলার মায়েরা সন্ধ্যাবেলায় তাদের সন্তানের কল্যান এর জন্য প্রদীপ জ্বালিয়ে ভগবান শিব এর পূজা করে সারাদিনের উপবাস বা উপস ভঙ্গ করেন। নীল পুজো উপলক্ষে হুগলি জেলার পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ উৎসব ও মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিষ্ণুপুর থানার ঝিকুর বেড়ে গ্রামে নীল পুজো উপলক্ষে বড় কাছারিতে উৎসব ও মেলা বসে। বীরভূমের নলহাটি থানার অন্তর্গত বিলকান্দি গ্রামে দক্ষিণা কালীর ধ্যানে এই দিন অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ উৎসব। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুরে খাড়ি ফৌজদার তলায় সর্বমঙ্গলা দেবীর বার্ষিক পুজো উপলক্ষে মেলা বসে এই দিন।