শ্রীলংকায় এখন রাডার বেস তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। যাতে তারা ভারত মহাসাগরে ভারতের কর্মকাণ্ড ও নৌবাহিনীর ওপর নজর রাখতে পারে। শুধু ভারত মহাসাগরই নয়, আরব সাগরের ওপর নজর রাখতে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলার প্রস্তুতি নিয়েছে চীন। আরব সাগরের পশ্চিমে জিবুতিতে চীনের নৌঘাঁটি প্রস্তুত রয়েছে।
বিশেষ প্রতিনিধিঃ চীন ও ভারতের মধ্যে একদিকে স্নায়ুর লড়াই, অন্যদিকে সীমান্ত বিরোধ। এরই মাঝে ভারতের আন্দামান থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে মায়ানমারের কোকো দ্বীপে চীনা কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিকে হাল্কাভাবে নিচ্ছে না ভারত।
এ ব্যাপারে ভারত শুধু বিরোধিতাই করছে না, কোকো দ্বীপপুঞ্জে চীনা কার্যকলাপ বন্ধ করতে মিয়ানমারের ওপর চাপও সৃষ্টি করছে ভারত।
প্রমান হিসাবে, ভারত মিয়ানমারকে বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট ছবিও শেয়ার করেছে, যেখানে কোকোতে চীনের ভূমিকা দেখা গেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছেন, ভারত তার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
কিন্তু, মিয়ানমারের সামরিক সরকার কোকো দ্বীপপুঞ্জে চীনের যে কোনো ধরণের তৎপরতা অস্বীকার করেছে। মিয়ানমারের মুখপাত্র জেনারেল জ মিন তুন বলেছেন, চীন কোকো দ্বীপে গুপ্তচর অবকাঠামো গড়ে তুলছে, এটি অর্থহীন। ভারত খুব ভালো করেই জানে যে, এখানে শুধু মিয়ানমারের সেনাবাহিনীই তাদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে। এখানে অন্য কোনো দেশের কেউ নেই।
তিব্বতে চীনের রাডার ঘাঁটি
জানা গেছে, কোকো দ্বীপ থেকে ভারতের পূর্ব উপকূলের প্রতিটি এলাকায় নজরদারি করা সহজ। এছাড়া, ভারত মহাসাগরের বড় অংশের ওপর নজর রাখতে পারবে চীন। তাছাড়া, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্রও পূর্ব উপকূলে।
জানা গেছে, কোকো দ্বীপে এখন পর্যন্ত এয়ার স্ট্রিপ এবং অন্যান্য কিছু নির্মাণ কাজও করা হয়েছে। চীনা জাহাজ এখানে বহুবার দেখা গেছে এবং সূত্র বলছে যে চীন এখানে গুপ্তচর সরঞ্জাম স্থাপন করছে।
অন্যদিকে, শ্রীলংকায় এখন রাডার বেস তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। যাতে তারা ভারত মহাসাগরে ভারতের কর্মকাণ্ড ও নৌবাহিনীর ওপর নজর রাখতে পারে। শ্রীলঙ্কার ডন্ড্রা উপসাগরের জঙ্গলে এই রাডার বেস তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে।
যুক্তরাজ্যের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র চীনের রাডার সিস্টেমের কথা প্রকাশ করেছে। প্রকল্পটির নেতৃত্ব দেবে চীনের বিজ্ঞান একাডেমি।
বিশেষজ্ঞরা ইকোনমিক টাইমস পত্রিকাকে জানিয়েছেন, রাডার বেস তৈরি হলে গোটা দক্ষিণ ভারতের ওপর নজর রাখতে পারবে চিন। এই ঘাঁটি থেকে ভারতের কুদানকুলাম ও কালপাক্কাম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর নজর রাখতে পারে চীন। যা ভারতের কৌশলগত স্বার্থের পরিপন্থী হবে। এটি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভারতীয় নৌবাহিনীর গতিবিধিকে সহজে ট্র্যাকিং সক্ষম করতে পারবে। শ্রীহরিকোটায় ভারতের স্পেস স্টেশনও এর রেঞ্জে থাকবে।
শুধু ভারত মহাসাগরই নয়, আরব সাগরের ওপর নজর রাখতে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলার প্রস্তুতি নিয়েছে চীন। আরব সাগরের পশ্চিমে জিবুতিতে চীনের নৌঘাঁটি প্রস্তুত রয়েছে।
দ্য সানডে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরব সাগরের উত্তর দিকে পাকিস্তানের গোয়াদার বন্দরে চীনের নৌঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দক্ষিণে মরিশাসে নৌঘাঁটি নির্মাণের জায়গা খুঁজছে চীন।