চলছে ভরা মৌসুম কিন্তু দেখা নেই বৃষ্টির, চরম ঝুঁকিতে দক্ষিনাঞ্চলের চিংড়ি চাষিরা

বিশ্বজিৎ মন্ডল, ঢাকাঃ বাংলাদেশের সাদাসোনাখ্যাত চিংড়ি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবিকার সবথেকে বড় উৎস। কিন্তু এ বছর প্রচন্ড তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে মৎস্য ঘেরের পানি। ফলে ভরা মৌসুম হলেও বিপাকে পড়েছে দক্ষিণাঅঞ্চলের বিপুলসংখ্যক চিংড়ি চাষী। এর ফলে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ( খুলনা,সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ) এর চাষিরা। মূলত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম এবং হঠাৎ নদীর পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় বিপর্যয়ে পড়েছে চিংড়ি পরিবেশ। ফলে অধিক হারে চিংড়ি মারা যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে চাষিরা। অথচ জুন-জুলাই চিংড়ি চাষিদের জন্য স্থানীয়রা ভরা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। এ সময়ে ঘেরে চিংড়ি কম মারা যাওয়ার কারণে অনেকেরই বিনিয়োগ উঠে আসে। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমেও দেখা নেই বৃষ্টির ফলে বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার চিংড়ি চাষিরা। গত সপ্তাহখানেক ধরে প্রতিটি ঘেরে ব্যাপক হারে চিংড়ি মরতে শুরু করেছে। ফলে অধিকাংশ চিংড়ি চাষিই এবার লোকসানের শঙ্কায় রয়েছে। এমনটাই দাবি চাষিদের।

   

 সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে চিংড়ি ঘেরের মাঝারি ও বড় আকারের চিংড়িই বেশি মরছে। আর ঘেরে মাছ মরা শুরুর দু-তিন দিনের মধ্যেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপক হারে মাছ মরে যাওয়ায় ঘেরের পাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। অনেককেই ঘের ছেড়ে চলে গেছে। আবার অনেকে ঘেরের পানি সরিয়ে নতুন করে প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা করছে। সূত্র জানায়, এবার মৌসুমের শুরুতেই ভাইরাসে কিছু ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে নতুন করে প্রস্তুতি নিয়ে অনেকে মাছ ছেড়েছিলো। কিন্তু কোরবানির ঈদের পর পূর্ণিমার জোয়ারে ঘেরের মাছ আবারও মারা যাচ্ছে। এ অবস্থায় চাষীরা পুঁজি ফিরে পাওয়া নিয়ে হতাশায় ভুগছে। কারণ মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে মাছ মরে যাওয়ায় এখন আর কেউ ঋণ দিতে চাইছে না। আর ঘেরে ঘেরে মাছের মড়ক শুরু হওয়ায় অনেকেরই পথে বসার উপক্রম হয়েছে। কারণ মৌসুমের শুরুতে চাষীরা এক দফায় ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ক্ষতি কাটাতে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ঘের প্রস্তুত করা হয়েছিল। এবার দ্বিতীয় দফায় ধরা খেয়ে নিঃস্ব হতে চলেছে চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ীরা। এদিকে মৎস্য কর্মকর্তাদের মতে, বছরের এ সময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে পানির পিএইচ (অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব) মাত্রা চিংড়ির চাষের জন্য অনেকটা সহনশীল পর্যায়ে চলে আসে। ফলে অধিকাংশ ঘেরে উৎপাদন বেশি হয়। কিন্তু এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম এবং হঠাৎ নদীর পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় চিংড়ি পরিবেশ বিপর্যয়ে পড়েছে। যে কারণে অধিক হারে চিংড়ি মারা যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে চাষিরা। ফলে এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় রয়েছে।
Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad