লালু-রাবড়ি দেবীর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা ট্রান্সফারঃ চাকরি কেলেঙ্কারী

ভয়েস ৯, নিউজ ডেস্কঃ চাকরি কেলেঙ্কারির মামলায় বিহার, দিল্লি ও হরিয়ানার ২৫টি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। সিবিআই ইনস্পেক্টর জয়রাজ কাটিয়ার যে রিপোর্ট পেশ করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, ২০০৪ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে বিভিন্ন জোনে রেলের গ্রুপ 'ডি' পদে অনেককে অস্থায়ীভাবে নিয়ে আসা হয়, পরে ভারতীয় রেলের অজানা কিছু আধিকারিক তাদের নিয়মিত করে দেন। এই মানুষগুলো জমির বিনিময়ে গ্রুপ 'ডি' চাকরি পেয়েছে। অভিযোগ, এরকম ক্ষেত্রে নিয়োগের জন্য রেলের যে নিয়ম ও নির্দেশিকা রয়েছে। তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। 

 তদন্তে জানা গিয়েছে, পটনায় বসবাসকারী এক ব্যক্তি জব্বলপুর, কলকাতা, জয়পুর, হাজিপুর, দিল্লির মতো বিভিন্ন জোনে নিযুক্ত ছিলেন। বিনিময়ে হয় তিনি নিজে বা তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভারত সরকারের তৎকালীন রেলমন্ত্রী, লালু যাদবের নামে অথবা 'একে ইনফোসিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেড' সংস্থার নামে তাঁদের জমি হস্তান্তর করেন। পাটনার মাহুবাগের বাসিন্দা প্রয়াত কিষাণ দেব রাই ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ছাড়ে রাবড়ি দেবীর নামে ৩৩৭৫ বর্গফুট জমি দেন। বিনিময়ে কিষাণ দেবের নাতি রাজকুমার, মিথলেশ ও অজয় কুমারকে মুম্বইয়ের গ্রুপ 'ডি' পদে বসানো হয়। 


 পাটনার মাহুবাগের বাসিন্দা সঞ্জয় রায় ৩,৭৫,০ টাকার বিক্রয় বিবেচনায় রাবড়ি দেবীর নামে ৩৩৭৫ বর্গফুট জমির একটি পার্সেল দিয়েছিলেন। বিনিময়ে সঞ্জয় রায়, ধর্মেন্দ্র ও বিকাশ মুম্বইয়ের রেলে চাকরি পান। পাটনার বিন্দোল গ্রাম পুলিশ স্টেশন বিহতার বাসিন্দা কিরণ দেবী লালু যাদবের মেয়ে মিসা ভারতীর নামে প্রায় ৮০৯০৫ বর্গফুটের এক একর ৮৫ (৩/৪) জমির একটি পার্সেল ৩,৭০,০ টাকার বিক্রয় সংযোগে স্থানান্তর করেন। 

 মহুবাগের হাজারি রাই তাঁর জমি 'একে ইনফোসিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেড'-এর দিল্লি-ভিত্তিক সংস্থার প্রায় ৯৫২৭ বর্গফুট ১০,৮৩,০ টাকার বিক্রয়ে ছাড় দিয়েছিলেন এবং বিনিময়ে তাঁর দুই ভাগ্নে দিলচাঁদ এবং প্রেম কুমার জব্বলপুর এবং কলকাতা রেলওয়েতে চাকরি পেয়েছিলেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে লালু যাদবের স্ত্রী রাবড়ি ও মেয়ের নামে 'একে ইনফোসিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেড' সংস্থার সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়। পরে তিনি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকও হন। 


 ১৩ লক্ষ টাকার বিক্রয়ে ছাড় দিয়ে ১৩৬০ বর্গফুট রাবড়ি দেবীর নামে নিজের জমি দিয়েছিলেন মহুবাগের প্রয়াত লালবাবু। বিনিময়ে ২০০৬ সালে তাঁর ছেলে লালচাঁদকে জয়পুর রেল জোনে চাকরি দেওয়া হয়। ৪,২১,০ টাকার বিক্রয়ে ছাড়ে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা হরদ্যানন্দ চৌধুরীর নামে নিজের জমি ৩৩৭৫ বর্গফুটের কাছে হস্তান্তর করেন মহুবাগ পাটনার ব্রজ নন্দন। তদন্তে জানা গেছে যে হরদয়ানন্দ চৌধুরীকে ২০০৫ সালে হাজিপুরে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। 

হিমা যাদব লালুর মেয়ের নামে গিফট ডিড হিসাবে জমিটি দিয়েছিল তারা। লালুর সঙ্গে হরদয়ানন্দের সম্পর্ক নেই এবং সার্কেল রেট অনুযায়ী সেই সময় এই জমির দাম ছিল ৬২,১০,০ টাকা। মহুবাগের বিষণ দেব সিওয়ানের বাসিন্দা লালন চৌধুরীর নামে ৩৩৭৫ বর্গফুট জমি দেন। বিনিময়ে তাঁর নাতি পিন্টু কুমারকে ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে চাকরি দেওয়া হয়। তদন্তে জানা গেছে যে লালন চৌধুরী উপহারের দলিল হিসাবে মিসা যাদবের নামে জমিটি স্থানান্তর করেছিলেন। সেই সময় এই জমির সার্কেল রেট ছিল প্রায় ৬২,১০,০০০ টাকা। 

তদন্তে জানা গেছে যে এই অঞ্চলগুলিতে কোনও কাজের জন্য কোনও পাবলিক নোটিশ জারি করা হয়নি। জমির বিনিময়ে চাকরি নেওয়া লালু যাদব, রাবড়ি দেবী, মিসা ভারতী, হিমা যাদব সহ অন্যান্য অভিযুক্তরা। তাদের বিরুদ্ধে আইপিসি ১২০বি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১১, ১২ (১৯৮৮), ১৩ (২) ১৩ (১) (ঘ) দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৮৮ এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০২২ সালের ১৮ মে এফআইআর দায়ের করার পর আইও রূপেশ কুমার শ্রীবাস্তব, এসপি সন্দীপ কুমার শর্মার তত্ত্বাবধানে এই মামলার তদন্ত চলছে। এই নিয়ে ২৫টি জায়গায় সিবিআই হানা চলছে। যার মধ্যে রয়েছে লালু ঘনিষ্ঠ এবং তেজস্বীর সঙ্গে যুক্ত একটি মল। সৌজন্যঃ টিভি ৯

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad