মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে উত্তরপ্রদেশ সেরাঃ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো

গর্ভবতী মহিলাও ছাড় পায়নি ধর্ষণের হাত থেকে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর, বরেলির বিশরান্তগঞ্জ থানার একটি খামারে কাজ করছিলেন এক অন্তঃস্বত্বা মহিলা, সেই সময় তিন ব্যক্তি তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় তার গর্ভপাত হয়েছিল এবং তিনি এখন গুরুতর অবস্থায় জেলা হাসপাতালে ভর্তি।
অলোকেশ শ্রীবাস্তব, নতুন দিল্লিঃ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পেরিয়ে আজও দেশের মহিলারা নিরাপত্তাহীন। কখনো পণপ্রথার নামে, কখনো ‘অনার কিলিং’, কখনো ধর্ষণ, কখনো দলিত তথা নীচু জাত হওয়ার কারণে। মহিলা, এমনকি শিশু-কিশোরীরাও আজ নিরাপদ নয়। আর এ ব্যাপারে দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ প্রথমেই নজর কাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা বারাণসীতে এক ট্রেনারের দ্বারা কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। সন্ত কবীর নগরে কিশোর দম্পতির মৃতদেহ একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৬টি পৃথক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সামনে এসেছে। খোদ রাজধানীর গুড়ম্বা থানা এলাকায় আট বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। গর্ভবতী মহিলাও ছাড় পায়নি ধর্ষণের হাত থেকে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর, বরেলির বিশরান্তগঞ্জ থানার একটি খামারে কাজ করছিলেন এক অন্তঃস্বত্বা মহিলা, সেই সময় তিন ব্যক্তি তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় তার গর্ভপাত হয়েছিল এবং তিনি এখন গুরুতর অবস্থায় জেলা হাসপাতালে ভর্তি।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর মতে, ২০২১ সালে মহিলারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অপরাধের মুখোমুখি হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। জাতীয় মহিলা কমিশনের মতে তারা উত্তরপ্রদেশ থেকে ২০২১ সালে মহিলাদের বিরুদ্ধে সর্বাধিক সংখ্যক মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ পেয়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এই রাজ্যে দলিতদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার ৭.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ ব্যাপারে মধ্যপ্রদেশের স্থান সর্বোচ্চ। সারা ভারতে দলিত মহিলা ধর্ষণের ঘটনা ৬.২ শতাংশ কমে গেলেও, ২০১৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে তা ৩.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭ সালের তুলনায় এই বৃদ্ধির হার ছিল ১৩.৬ শতাংশ। জানা যায়, গত এক সপ্তাহে দুটি ধর্ষণ ও খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে লখিমপুর খেরিতে ১৫ ও ১৭ বছর বয়সী দুই দলিত বোনকে গণধর্ষণ করার পর খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পিলিভিট জেলায় আরও এক দলিত নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। দুই সপ্তাহ আগে এই হামলার ঘটনা ঘটলেও মেয়েটি চলতি সপ্তাহেই মারা যায়। হাথরাসে ২০ বছর বয়সী এক দলিতকে গণধর্ষণ ও হত্যা এবং দুই বছর আগে ২০ বছর বয়সী এক দলিত নারীকে হত্যার ঘটনা এখনও টাটকা।
লখিমপুর খেরি মামলায়, অভিযুক্তরা দ্রুত গ্রেপ্তার হয়েছিল, কারণ তারা মুসলিম ছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। যদিও মৃতাদের পরিবার বলছে, এই মামলায় "লাভ জিহাদ" বিষয়টা ঢোকানোর চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজুর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মহিলা, শিশু ও প্রবীণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধের ক্ষেত্রে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচারাধীন ১৩.৮১ লক্ষ মামলার মধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি উত্তরপ্রদেশে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad