অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দীপঙ্কর রায় দুপুরে বলেন, এখন পর্যন্ত মোট ৩৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে শিশু ১১ জন, নারী ২১ জন ও পুরুষ সাতজন। নিহতদের মধ্যে বোদা উপজেলার ২৪ জন, দেবীগঞ্জের ১৩ জন, অটোয়ারীর একজন এবং ঠাকুরগাঁও সদরের একজন রয়েছেন। এখনো পর্যন্ত সকলকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। মৃতদের মধ্যে মাত্র ২৫ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় গতকাল রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গতকাল ২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। নিঁখোজদের সন্ধানে তল্লাশী চলতে থাকে। ঘটনাস্থল থেকে ৩০ কিমি পর্যন্ত এলাকায় তল্লাশী চালানো হতে থাকে।
বোদা থানার ওসি সুজয় কুমার রায় জানান, “স্রোতের টানে হয়তো অনেক লাশ আশপাশের নদীতে ভেসে গেছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে। বোদা উপজেলার পাশেই দেবীগঞ্জ উপজেলা; তার পরেই দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা। আজ সেখান থেকে চারটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।”
কাল ছিল মহালয়া। তাই শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা করে করোতোয়া নদী পেরিয়ে প্রায় বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা প্রায় ৭০ জন নারী-শিশু-পুরুষ বোদেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছিলেন। জানা গেছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই উল্টে যায় নৌকাটি। ডুবে মারা যান ২৫ জন।
বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার গ্রামে এখন শোকের ছায়া। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন, মৃতের কাছের মানুষগুলো। অনেকের পুজোর কেনাকাটা সারা। এক অদ্ভুত কষ্ট চারিদিকে। পাঁচপীর এলাকার রঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ‘আমার মা, বাবাকে নিয়ে বোদেশ্বরী পীঠ মন্দিরে মহালয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। নৌকা ডুবে আমার মা মারা যান। বাবা সাঁতরে পারে উঠেছেন। ‘
শুধু রঞ্জিতবাবু নন, স্বজনহারা এই গ্রামের মানুষদের কাছে এখন সব হারিয়ে গেছে, পুজোর আনন্দ শত যোজন দূরে।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী নৌকাটিতে ছিল। ছোট নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী তোলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।“ তিনি জানান, “কেউ নিখোঁজ থাকলে তাদের স্বজনদের যোগাযোগের জন্য মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। “