মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই বাড়ি বাড়ি কোভিড টিকা দেওয়ার নির্দেশ, অন্যদিকে সুপ্রীম কোর্টের আদেশ – ‘কাউকে ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করা যাবে না।‘

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এলএন রাও এবং বিআর গাভাই এক আদেশে বলেছিলেন, "শারীরিক অখণ্ডতা আইনের অধীনে সুরক্ষিত এবং কাউকে টিকা নিতে বাধ্য করা যাবে না।“ সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছিল যে, মানুষ ও ডাক্তারদের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের বিরূপ ঘটনা নিয়ে জনসমক্ষে রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে।

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতাঃ
এখনো রাজ্যে মজুত রয়েছে ৫ থেকে ৬ লক্ষ কোভিড ভ্যাকসিন। আর শুধু কলকাতাতেই ১৬ হাজার টিকার ডোজ রয়েছে। এর মধ্যে কোনও টিকার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে ৩১ অক্টোবর আবার নভেম্বরের মাঝামাঝিও বহু সংখ্যক টিকার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তাই কোভিড ভ্যাকসিন যাতে কোনওভাবে নষ্ট হয় না হয় তার জন্য বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টিকা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতা জেলা পরিবার কল্যাণ আধিকারিক। 
প্রস্তুতকারক সংস্থার পক্ষ থেকে জানা গেছে, বেশিরভাগ ভ্যাকসিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ প্রায় দুই থেকে তিন বছর। কোভিড-১৯-এর টিকা প্রস্তুতকারকরা এই টিকা কতদিন স্থায়ী হবে তা অনুমান করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন; তাদের প্রায় তিন থেকে ছয় মাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ রয়েছে। এ্বের আগে, বেশ কয়েকটি প্রস্তুতকারক তাদের ভ্যাকসিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছিল। 
২০২১ সালের ২৫ শে অক্টোবর, ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চিঠির জবাবে, সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) কোভ্যাক্সিন (হোল ভিরিয়ন, ইনঅ্যাক্টিভেটেড করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন) এর শেল্ফ লাইফ নয় মাস থেকে বাড়িয়ে ১২ মাস করার অনুমোদন দিয়েছে। একইভাবে, ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কোভিশিল্ডের মেয়াদ ছয় মাস থেকে বাড়িয়ে ৯ মাস করা হয়।
মনে রাখতে হবে, সঠিক তাপমাত্রায় না রাখলে টিকার মেয়াদও শেষ হয়ে যেতে পারে। বেশ কয়েকটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের নির্দিষ্ট স্টোরেজ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে রেফ্রিজারেটর এবং ফ্রিজার। তবে, মেয়াদ উত্তীর্ণ টিকা নিলে কী ক্ষতি হবে, তা নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য এই মুহুর্তে প্রস্তুতকারকদের হাতে নেই। 
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, নষ্ট হওয়ার হাত থেকে করোনা ভ্যাকসিন বাঁচাতে সম্প্রতি সমস্ত জেলাকে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। নির্দেশিকা অনুযায়ী, টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। মাইকে করে প্রচার চালাতে হবে। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা নিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে। 
 অন্যদিকে গত মে মাসে দেওয়া সুপ্রীম কোর্টের আদেশ – ‘কাউকে ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করা যাবে না।‘ টিকাকরণের বিরূপ প্রভাব নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্ট প্রকাশ করার নির্দেশও দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এলএন রাও এবং বিআর গাভাই এক আদেশে বলেছিলেন, "শারীরিক অখণ্ডতা আইনের অধীনে সুরক্ষিত এবং কাউকে টিকা নিতে বাধ্য করা যাবে না।“ সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছিল যে, সাধারণ মানুষজন ও ডাক্তারদের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের বিরূপ ঘটনা নিয়ে জনসমক্ষে রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত দৈনিক করোনা বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ‘গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের তুলনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা খানিকটা কমেছে। নতুন করে চার হাজার ৪৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। নতুন নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশে। অর্থা‍ৎ আগের দিনের চেয়ে শনাক্তের হার নিম্নমুখী। নতুন করে আরও ৩৩ জনের শরীরে করোনার নমুনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে রাজ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসে মোট আক্রান্ত হলেন ২১ লাখ ১৭ হাজার ৯১১ জন। নতুন করে কোনও প্রাণহানি না ঘটায় মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ৫২৭ জনই রয়েছে।’

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad