তারক ঘোষ
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোর এই দাবির নিরপেক্ষতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। কেননা, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোতে এমন কোনও তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি, যা এই দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করে। শুধু স্যাটেলাইট চিত্রের কথা উল্লেখ করেই এমন দাবি করা হয়েছে।
৭ ই অক্টোবর, ২০২২ তারিখে তোলা একটি উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে যে সাতটি টিইউ-১৬০
কৌশলগত বোমারু বিমান (লাল রঙে চিহ্নিত) এবং চারটি টিইউ-৯৫ বিমান (হলুদ রঙে চিহ্নিত)
ওলেনিয়া বিমানঘাঁটিতে, রাশিয়া কোলা উপদ্বীপ
আর এটাতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অন্যদিকে জাতিসংঘের এক আধিকারিক দাবি করেছেন যে রাশিয়া তার সৈন্যকে মাদক সরবরাহ করছে যাতে তারা "সামরিক কৌশল" এর অংশ হিসাবে ইউক্রেনীয়দের যৌন নিপীড়ন করতে পারে। জাতিসংঘের দাবি অনুযায়ী, রাশিয়ান সৈন্যদের ভায়াগ্রা দেওয়া হচ্ছে যাতে ইউক্রেনের অসামরিক নাগরিকদের ধর্ষণ করা যায়।
এ সবই চাপ সৃষ্টির কৌশল বলে মনে করছেন সমর বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু পরমাণু অস্ত্র নিয়ে রাশিয়ার কী কৌশল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ ব্যাপারে পরিষ্কার কিছু বলতে পারেনি।
পুতিন কি পিছু হটার সময় শেষ অস্ত্র হিসাবে বেছে নেবে পারমানবিক অস্ত্রকে? সেক্ষেত্রে কি সুনির্দিষ্ট কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের সাহায্য নেবে রাশিয়া? এই প্রশ্নটাই ভাবাচ্ছে সমগ্র বিশ্বকে।
আর ঠিক সেই মুহুর্তে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর ও ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পুতিনের নির্দেশে ১১টি টিইউ-১৬০ নিউক্লিয়ার বোমারু বিমান রাশিয়ার ওলেনিয়া বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এবং কোলা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আরও চারটি টিইউ-৯৫এস তৈরি রয়েছে।
একই দাবি করেছে নরওয়ের একটি ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইটও।
তারা জানিয়েছে, নরওয়ে থেকে মাত্র ২০ মাইল দূরে ১১টি বোমারু বিমান মোতায়েন রয়েছে। উপগ্রহ চিত্রে এমনটাই দেখা গেছে। দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা ও সেদেশের সংবাদপত্র ওলেনিয়া বায়ুসেনা ঘাঁটিতে রুশ সেনার সক্রিয়তার কথা জানিয়েছিল। বিভিন্ন সূত্রে এই খবর আসার পরই গোটা বিষয় নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন সমর বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু হঠাৎই কেন ইউরোপের উপর পরমাণু হামলার আশঙ্কা বাড়ছে?
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, সাধারণত রাশিয়ার পরমাণু বোমারু বিমানগুলো এঙ্গেলস বায়ু সেনা ঘাঁটিতে রাখা থাকে। রাজধানী মস্কো থেকে যার দূরত্ব ৪৫০ কিলোমিটার। বর্তমান সেখান থেকে বোমারু বিমানগুলোকে ফিনল্যান্ড ও নরওয়ের সীমান্তের দিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাতেই আশঙ্কা ঘনীভূত হয়েছে। যদিও বোমারু বিমানগুলোতে পরমাণু বোমা যুক্ত করা হয়েছে কিনা, সে ব্যাপারেও ওই প্রতিবেদনগুলোতে নিশ্চিত কোনও তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এর সঙ্গে ব্যারেন্টস সাগরে পূর্বঘোষিত সামরিক মহড়ার ওতপ্রোতভাবে যোগ থাকতে পারে, অথবা সম্ভবত ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে পুতিনের সংঘাতে আরও পারমাণবিক অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল, ডেইলি মিরর, নিউজ এইউ