গুজরাতঃ মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১, তদন্তে ৫ সদস্যের সিট, ঠিকাদাররা টাকা নিয়ে সেতুতে উঠতে দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ

অলোকেশ শ্রীবাস্তব, নতুন দিল্লিঃ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল মোরবি শহরে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে ১৩৫ জনেরও বেশি নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্তের জন্য একজন আইএএস কর্মকর্তার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করেছেন। এই এসআইটি-র নেতৃত্বে থাকবেন মিউনিসিপ্যালিটির কমিশনার রাজকুমার বেনিওয়াল, এবং অন্য সদস্যরা হলেন সড়ক ও বিল্ডিং বিভাগের সচিব সন্দীপ ভাসাভা, ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ সুভাষ ত্রিবেদী এবং স্ট্রাকচারাল ও কোয়ালিটি কন্ট্রোলে বিশেষায়িত দুই জন ইঞ্জিনিয়ার। 
এদিকে, সেতু ধসের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৪১-এ পৌঁছেছে এবং ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ১৩৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে এবং বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 
রাজ্য সরকার এনডিআরএফের চারটি দল, পাশাপাশি প্রতিরক্ষা কর্মীদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে মোতায়েন করেছে এবং এমনকি আশেপাশের জেলাগুলি থেকে সাঁতারু ও ডুবুরিদেরও তলব করেছে। আরও ২৪ ঘণ্টা এই তল্লাশি অভিযান চলতে পারে বলে জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ।
সেনা, নৌবাহিনী, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, স্থানীয় ফায়ার ব্রিগেড দল এবং স্থানীয় ডুবুরি ও সাঁতারুদের প্রায় ২০০ জন জওয়ান এই তল্লাশি অভিযানে যোগ দিয়েছেন। রাজকোটের কালেক্টর অরুণ মহেশ বাবুও মোরবিতে ক্যাম্প করছেন এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছেন। 

গুজরাতের মোরবির ঝুলন্ত সেতু দুর্ঘটনার কারণ কি? এই প্রশ্নটাই এই মুহুর্তে বড় হয়ে উঠেছে। শুধ তাই নয়, আর কয়েকদিনের মধ্যেই গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন। বিরোধী দল কংগ্রেস তো বটেই, প্রথমবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে নেমে আম আদমী পার্টিও এই মুহুর্তে গুজরাতের বিজেপি সরকারের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছে। 
 গুজরাতের এই মোরবি ঝুলন্ত সেতুটি শুধ স্থানীয় মানুষজনের কাছেই নয়, বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের কাছেও বিশেষ দ্ররষ্টব্যস্থল ছিল। 
তাই দীপাবলি ও ছট পুজো উপলক্ষে গতকাল সেতুতে উঠে আনন্দে মেতেছিলেন কয়েকশো মানুষ। তারা ভাবেননি, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের ভাগ্যে কী ঘটতে চলেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেতুর ঠিকাদার দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ১২ ও ১৭ টাকা করে নিচ্ছিলেন। ফলে অতিরিক্ত টাকার লোভে সেতুর উপর ভিড় বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
দুর্ঘটনার কয়েক ঘন্টা পরেই, উঠে এসেছে, উপযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই কীভাবে সেতুটি আবার খুলে দেওয়া হলো জনগণের ব্যবহারের জন্য? এই প্রশ্নটা এখন ভাবাচ্ছে সকলকে। মোরবিতে সেতু দুর্ঘটনা সম্পর্কে পৌরসভার মুখ্য আধিকারিক সন্দীপ সিং জালা জানিয়েছিলেন, সেতুটি প্রস্তুত ছিল এবং পৌরসভার যাচাই-বাছাই ছাড়াই সেতুটি চালু করা হয়েছিল, তাই দায়ী সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
তারা বলেন, বেসরকারি সংস্থাটি সেতুটি সংস্কার করার পর যাচাই-বাছাইয়ের সার্টিফিকেট, বহন ক্ষমতা সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড বাজেয়াপ্ত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেতুর কাজে গাফিলতি বেরিয়ে এলে দায়ী সকলের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য আধিকারিক।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad