ফোনে অনুলিখনঃ ছবি সংগৃহিত
স্নিগ্ধা মুখোপাধ্যায়, লন্ডনঃ কলকাতা লন্ডন হতে পেরেছে কি না জানি না, তবে লন্ডন অন্ততঃ এদিন হয়ে উঠলো কলকাতার বাবুঘাট, কিংবা বাগবাজার ঘাট। কলকাতার মতোই, এখানে টেমসের ধারে অনুষ্ঠিত হলো পুজো কার্নিভ্যাল। টেমসের উপর ভাসমান প্যারেড। প্রবাসের বাঙালি যে বাঙালিই, লন্ডনের দৈনন্দিন জীবন যে তাদের সংষ্কৃতিকে কেড়ে নিতে পারে নি, তা টেমসের ধারা ধুনুচি নাচ না দেখলে বুঝতেই পারবেন না।
প্রথম বারের এই মনকাড়া কার্নিভ্যালের উদ্যোক্তা ছিলেন হেরিটেজ বেঙ্গল গ্লোবাল। এদের কথা’ সংবাদ ভয়েস ৯’ এ প্রবাসের পুজো লেখার সময় উল্লেখ করেছিলেম। ‘বেঙ্গল হেরিটেজ ফাউন্ডেশন’ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের একটি সংগঠন। সংস্থাটি ক্রোয়েডনের সিবিসি, হ্যারোর লন্ডন কালীবাড়ি এবং পড়ার সংস্কৃতির মতো দাতব্য সংস্থাগুলিকে সাহায্য করে। আবার, এলএসইউ ম্যাজিক বাস, বাঞ্চবো, সাবুজ সংঘ, সি ইএফআই এবং ক্যালকাটা রেসকিউ-এর মতো ভারতীয় দাতব্য সংস্থাগুলিকে নানাভাবে সহায়তা করে। বাঙালি যেখানেই যাক না কেন, আলাস্কা কিংবা আলেকজান্দ্রিয়া, সে যে আদপে বাঙালি সংষ্কৃতির ধারক ও বাহক, সেটা বুঝিয়ে দেওয়াই উদ্যোক্তাদের মূল লক্ষ্য। এদের আর একটি কাজ হচ্ছে, বিশ্ব-বাঙালিকে একসূত্রে গাঁথা।
কয়েকদিন আগেই, ইউটিউবে দেখেছিলাম কলকাতার রেড রোডের কার্নিভ্যাল।
এই বোট দুটি সাজানো হয়েছিল টেমস কার্নিভ্যালে
আর এখানে টেমসের ধারে দেখলাম আর এক কার্নিভ্যাল, এক সূত্রে গাঁথা বিশ্ব-বাঙালিকে। এদিনের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনার সুজিত ঘোষসহ যুক্তরাজ্যের রয়েল আর্মি ও রয়েল এয়ারফোর্সের প্রতিনিধিরা। তবে, এখানে টেমসের উপর হল নদী প্যারেড।
টেমসের বুকে ২ টি সুসজ্জিত ইয়ট। কলকাতার ৭৫ পল্লি, বাগবাজারের প্রতিমার কাট আউট দিয়ে এই বোটগুলি সাজানো হয়েছিল। এর উপর স্থাপন করা হল মাকে। বোটে ছিলেন বহু প্রবাসী বাঙালি। বার্মিংহামের মিডল্যান্ডস বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন এবং পিটারবরোর বেঙ্গলি সংস্কৃত ক্লাবের কাটআউটগুলিও সাজানো হয়েছিল। তারপর বেজে উঠল ঢাক আর আমাদের যাত্রা হল শুরু।
একদিকে টেমসের তীরে তখন শ’দুয়েক মানুষ। ঢাকের বাজনার সঙ্গে রীতিমতো মন খুলে নাচানাচিও করলেন তারা। এই নদী প্যারেড দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল, আমি যেন বাগবাজারের গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে, আর আমার চোখের সামনে গঙ্গা নদী।
হেরিটেজ বেঙ্গল গ্লোবালের ডিরেক্টর অনির্বাণ কুমার মুখোপাধ্যায় আমার বিশেষ পরিচিত। ও বললো, এ বছর কার্নিভ্যালের সাফল্যে আমরা উজ্জীবিত। এবার ট্রাফালগার স্কোয়ারে দিওয়ালির অনুষ্ঠান, তারপর আবার সামনের বছর পুজো কার্নিভ্যাল।