মেঘালয়ঃ ইউডিপি আজ প্রার্থীদের প্রথম তালিকা ঘোষণা করবে, তৃণমূল কোমর বেঁধে নির্বাচনে

রায়া গুপ্তা, ভয়েস ৯, শিলংঃ ত্রিপুরা আর মেঘালয়। উত্তর-পূর্বের এই ২ রাজ্য এই মুহুর্তে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ‘পাখির চোখ’। উত্তর-পূর্বের এই পার্বত্য রাজ্যগুলিতে তাই মেপে পা ফেলতে চাইছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জী মেঘালয়ে এসে জনসভা করে গেছেন। শুধু তাই নয়, মেঘালয়ের মানুষদের তাদের দলের প্রতি সমর্থন দেখে আপ্লুত হয়েছেন। তাই বিজেপির মিত্র-শাসিত মেঘালয়ে তাদের ‘জমি’  খোঁজার কাজ শুরু হয়ে গেছে। 
 তৃণমূল ২০১৮ সালের শেষ বিধানসভা নির্বাচনে গারো পাহাড়ের আটটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এ বার রাজ্যের একমাত্র বিরোধী দল হিসাবে তারা সব আসনে লড়ার জন্য কোমর বেঁধে নামছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জী নেঘালয়ে এসে বলেছিলেন, “চার মাস আগে, আমরা কয়েকশো দিয়ে সদস্যপদ অভিযান শুরু করেছিলাম। আজ, আমরা ১ লক্ষ সক্রিয় সদস্য নিয়ে একটি বিশাল বিশাল পরিবার। জনগণের সমর্থনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। প্রতিকূলতা যাই হোক না কেন, আমরা তাদের উন্নতি নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাব।“
তবে, তৃণমূলের আগমনে জমে উঠেছে রাজ্যের রাজনৈতিক তরজা। মেঘালয়ে তৃণমূলকে "বহিরাগতদের" দল হিসাবে চিহ্নিত করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলিকে আক্রমণ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 
তিনি বলেছিলেন, ‘যারা এটা বলছেন তাদের মনে রাখা উচিত যে ভূমিপুত্র পিএ সাংমা ২০১২ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় টিএমসির প্রার্থী ছিলেন।‘ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) রাজ্য সভাপতি ডাব্লুআর খারলুখি শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। 
বলেছিলেন, 'প্রয়াত পিএ সাংমাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি সমর্থন করেছিল এবং পশ্চিমবঙ্গে ২৭৮ জন বিধায়কের মধ্যে ২৭৫ জন প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভোট দিয়েছিলেন।‘ এনপিপি-র রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন, ‘আশা করা যায় যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি পরিবর্তন আনার কথা বলেছিলেন, তিনি অন্তত ২০১২ সালে রাজনৈতিকভাবে কী ঘটেছিল সেটা জানেন।“ 
 এদিকে, ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি (ইউডিপি) মঙ্গলবার ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের প্রথম দল হিসাবে তাদের প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে চলেছে আজ মঙ্গলবার। দলীয় সূত্রে জানা গেছে যে ইউডিপি মঙ্গলবার ৩০ জনেরও বেশি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে। সূত্রটি আরও জানিয়েছে যে ইউডিপির দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকায় বর্তমান বিধায়কদের নাম থাকবে যারা ইউডিপিতে যোগ দেওয়ার জন্য তাদের নিজ নিজ দল ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির কথা বলতে গেলে, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল এম সাংমাকে তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে, তবে প্রার্থী তালিকা সম্পর্কে এখনও কোনও বিবরণ প্রকাশ করেনি।
মেঘালয়ে ১৯৭৬ সাল থেকে, কোনও রাজনৈতিক দল রাজ্য বিধানসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস জোট সরকার গঠন করে। মেঘালয় বিধানসভার সর্বশেষ নির্বাচন ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মেঘালয় বিধানসভায় ৬০ জন সদস্যের মধ্যে ৫৯ জনকে নির্বাচিত করার জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার ফলাফল ৩ মার্চ ঘোষণা করা হয়েছিল।
মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচন ২০১৮-তে, ১৪ টি রাজনৈতিক দল এবং ‘নির্দল’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণায় বিলম্ব করছে। তারা আশা করছে যে অন্যান্য দল থেকে বেশ কয়েকজন বর্তমান বিধায়ক তাদের দলে যোগ দেবেন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad