মিজোরাম সরকার বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা চিন-কুকি সম্প্রদায়ের মানুষদের আশ্রয় দেবে

বিশেষ প্রতিনিধি, নতুন দিল্লিঃ মিয়ানমারের শরণার্থীদের মতো মিজোরাম সরকারও চিন-কুকি সম্প্রদায়ের ২৭০ জন উপজাতিকে একই ধরনের খাদ্য, ত্রাণ ও আশ্রয় দেবে, যারা জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের পর বাংলাদেশ থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পালিয়ে এসেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন এক অভিযান চালানোর পর গত রবিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম (সিএইচটি) থেকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ মিজোরামের লংতলাই জেলার পারভা গ্রামে বাংলাদেশের ১৩৭ জন শিশুসহ কমপক্ষে ২৭২ জন আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন আধিকারিক। 
উল্লেখ্য,কেএনএ, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামেও পরিচিত। এটি একটি জঙ্গি সংগঠন, যা উপজাতিদের জন্য সার্বভৌমত্ব দাবি করে। মিজোরামের চিন-কুকি উপজাতি এবং মিজোরা জো সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। মিজোরামের স্বরাষ্ট্র বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা সহানুভূতি প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট জেলাকে বাংলাদেশি নাগরিকদের খাদ্য ও মৌলিক সুযোগ-সুবিধাসহ সব ধরনের ত্রাণ সহায়তা দিতে বলেছেন। বাংলাদেশি নাগরিকদের লংতলাই জেলার পারভা-৩ গ্রামের একটি কমিউনিটি হল, একটি স্কুল ও একটি সাব-সেন্টারে রাখা হয়েছে।


 এদিকে, চিন-কুকি উপজাতিদের এক নেতা জানিয়েছেন, কেএনএ-র বিরুদ্ধে ধারাবাহিক দমন-পীড়নের কারণে বাংলাদেশ থেকে আরও শরণার্থী মিজোরামে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত সংলগ্ন পার্বত্য সিএইচটি-তে সংখ্যালঘু কুকি-চিন সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ। বাংলাদেশি নাগরিকরা এমন এক সময়ে এসেছেন যখন মিজোরাম সরকার ৩০,৫০০ এরও বেশি মিয়ানমারবাসীকে খাদ্য ও আশ্রয় দেওয়ারব্যবস্থা করেছে। 
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর, এরা গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল। উল্লেখ্য। সিএইচটি একটি দরিদ্র পাহাড়ি, বনাঞ্চল যা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি এবং বান্দরবান জেলার ১৩,০০০ বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এই এলাকার পূর্বে মিজোরাম, উত্তরে ত্রিপুরা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মায়ানমার সীমান্ত। জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উপজাতীয় এবং সাংস্কৃতিক ও জাতিগতভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad