রাষ্ট্রপতির পদ কোনো রাজনৈতিক পদ নয়, তবে রাজনীতির আসরে তাকে টেনে, অসম্মান কেন?

অসীম চাকলাদার 

 প্রথমেই একটা কথা বলা প্রয়োজন, রাষ্ট্রপতির পদ কোনো রাজনৈতিক পদ নয়, একটা সাংবিধানিক পদ। সংবিধান মতে ভারতের রাষ্ট্রপতি দেশের তিন বাহিনীর প্রধান। তিনি দেশের প্রথম নাগরিক। দ্বিতীয় কথা হলো, শুভেন্দু অধিকারী একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। শুভেন্দু অখিল গিরিকে যদি অসম্মান করে থাকেন, তাহলে বিষয়টা শুভেন্দুর সঙ্গে অখিলের হওয়ার কথা। এর মাঝে রাষ্ট্রপতিকে টেনে আনা হলো কেন? তিনি তো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাহলে? ভারতের একজন সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদাধিকারীকে কেন টেনে আনা হলো রাজনৈতিক মঞ্চে? 
 অখিল গিরি মন্ত্রী। সংবিধানকে মেনে শপথ নিয়েছেন, তিনি কি জানেন না, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদের একটু পার্থ্যক্য আছে। কারণ, রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হওয়ার পর তিনি আর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থাকেন না। আর আমাদের মাননীয় রাষ্ট্রপতি রাজনীতি জগতের মানুষ নন। অথচ, অখিলের কথায়, শুভেন্দুর উপর রাগে, তিনি রাষ্ট্রপতির উপমা দিয়েছেন। অখিল গিরির মনস্তত্ব বিশ্লেষণ করলে মনস্ত্বাত্বিকরা কিন্তু বলতে পারতেন, কেন তিনি এই কথা বলেছেন। 
তৃতীয় কথা হল, ঘটনার ২১ ঘন্টা পর টুইট বার্তায় তৃণমূল দল জানাচ্ছে, দল এটাকে সমর্থন করেনা। বোঝা গেল। কিন্তু যেটা বোঝা গেল না, সেটা হলো গতকাল ওই সভাস্থলে দাঁড়িয়ে কুনাল ঘোষ কেন ওই কথার প্রতিবাদ করলেন না। তিনি তো শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন, দীর্ঘদিনের নামী সাংবাদিক। তার তো এসব জানার কথা। না কি কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক, তা ভেবে বের করতে দলের সময় , কিংবা কারো অনুমতি লাগে? অর্থাৎ, খালি চোখে ভুল বুঝতে পেরেও চুপ করে থাকা। 
 অনেকে বলেছেন, কুনালবাবু আজ সাফাই না গেয়ে, গতকাল ইঙ্গিতে অখিলবাবুকে থামিয়ে দিতে পারতেন। তাহলে তিনি তা করেন নি কেন? বিষয় হলো, রাজনীতিতে তর্কাতর্কি, অকথা-কুকথা চলছে, কিন্তু যিনি রাজনীতির বাইরের মানুষ, তাকে টেনে আনাটা কি শোভা পায়? আর শেষ কথা হলো, তুলনা টেনে সাফাই দেওয়া যায় না। কারণ, এই ধরণের আচরণ দেশের কাছে অনভিপ্রেত, মর্যাদাহানিকর আর যারা সাফাই দিচ্ছেন, তারাও সেটা ভালোই বোঝেন। 
লেখক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক। মতামত তার নিজস্ব

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad