নারায়ণ পট্টনায়ক, পুরীঃ প্রভু আজ দর্শন দেন রাজরাজেশ্বর রূপে আর তাকে দর্শন করতে পুরী আজ ভক্ত সমাগমে মুখর। আজ কার্তিক পূর্ণিমার শেষ দিন, তার সঙ্গে চন্দ্রগ্রহণ। পবিত্র কার্তিক পূর্ণিমাকে প্রতিটি ওড়িয়া শ্রেষ্ঠ উৎসব হিসাবে দেখে থাকেন।
উৎকলের প্রথা অনুযায়ী, এ দিন বালি, সুমাত্রা, জাভা এবং বোর্নিওর মতো বিদেশী দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য নৌ যাত্রা করত এখানকার বণিকরা। দূর-দূরান্তে যাওয়ার সেই প্রাচীন ঐতিহ্যকে বিশ্বাস করে আজও নৌকা ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
গতকাল গভীর রাত থেকেই পুরীর সমুদ্রে কলা পাটুকা এবং ছাল পাতা, চাল, দিয়া, ধূপ, পান ও গুয়া দিয়ে তৈরি নৌকা ভাসিয়ে দেন ভক্তরা।
নৌকা ভাসানোর সময় তারা বলেন, "আ-কা-মা-বাই পানাগুয়া থোই, পানাগুয়া তোরা মাসাকা ধরম মোর।“ নৌকা ভাসানোর পরে, লোকেরা তাদের পরিবারের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করার জন্য দেব-দেবীদের মন্দিরে যান।
যেহেতু আজ চন্দ্রগ্রহণের দিন, তাই মানুষকে সকাল ৫ টা ৫৪ মিনিটের আগে এই সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান শেষ করতে হয়েছিল।
অন্যদিকে, গতকাল রাত ১২টার পর ঠাকুরকে স্বর্ণে সজ্জিত করা হয়, খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের সিংহ ফটক এবং মঙ্গল আরতি করা হয়। কিংবদন্তী অনুসারে, রাজা কপিলেন্দ্র দেব একটি প্রতিবেশী রাজ্য জয় করে বিপুল পরিমাণ সোনার গহনা নিয়ে এসেছিলেন। তিনি ১৪৬০ সালে সমস্ত সোনা মন্দিরে দান করেছিলেন। তারপর থেকে, স্বর্ণ বেশ দেবতাদের একটি প্রধান আচার হয়ে উঠেছে। এটি ছাড়াও আরও চারটি অনুষ্ঠানে, বহুদা যাত্রা, দশেরা, পৌষা পূর্ণিমা এবং দোলাপূর্ণিমায় দেবতাদের সোনার পোশাকে সজ্জিতকরা হয়।
আজ ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে শুরু হয়েছে শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের দর্শণ। ভক্তরা দুপুর ২.৩৮ টা পর্যন্ত প্রভুর দর্শন করতে পারবেন।
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, আজ ধর্ম মাসের শেষ দিনে মহোদয়ীতে স্নান করে শ্রীজিউয়ের দর্শনে কাইভাল্য ভোগ লাভ করলেই পরিত্রাণ পাওয়া যায় বলে মনে করা হয়। সেই কারণেই আজ লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমবেত হয়েছেন পুরীর মন্দিরে।