করোনাঃ চিনে যা হচ্ছে, ভারতে তা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কমঃ গগনদীপ ক্যাং

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ একদিকে মিডিয়া বাহিত চিনরে করোনা পরিস্থিতি যেমন মানুষের মনে এক অনাগত ভয় সৃষ্টি করেছে, পাশাপাশি, একশ্রেণির মিডিয়া যেভাবে ভারতেও এই সংক্রমণ ভয়াবহ হবে বলে হাওয়া তোলার চেষ্টা করছে, সেই মুহুর্তে ভারতের নামজাদা ভাইরোলজিস্ট বা সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ গগনদীপ ক্যাং এর মন্তব্য সকলের মধ্যে আশার সঞ্চার করছে।
দেশে করোনার নতুন ঢেউ আছড়ে পড়ার আগে, যেভাবে সোস্যাল মিডিয়াতে কেউ বা কারা ফেক নিউজ ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে, তা নিঃসন্দেহে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক। আগাম প্রস্তুতি নিশ্চয় প্রয়োজন, কিন্তু মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা নয়।
অন্যদিকে, এই ভয় বা আতঙ্ক থেকে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা মুনাফা লোটার চেষ্টা যে করবেন, তা বলাই বাহ্যল্য, কারণ, এই মুহুর্তে সবচেয়ে বড় ব্যবসা হলো ‘মেডিক্যাল ওয়ার্ল্ড’, বললেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গবেষক।
 তিনি জানান, ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে, তারা তাদের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে নিজেদের জিনগত পরিবর্তন আনবে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে, টিকার পরিবর্তন বা আপডেট যেমন জরুরী, তেমনই, প্রয়োজন, বিরাট পরিমাণ ডাটা সংগ্রহ করা। কেন তিন তিনটি টিকা ও বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরও মানুষ বার বার আক্রান্ত হচ্ছে সে ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন। করোনাতে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে টিকা নেওয়া ও না নেওয়া মানুষের শতকরা হিসাব প্রয়োজন, নইলে, একই টিকার প্রয়োগই চলবে, আখেরে মানুষের লাভ কিছু হবে না।
 হয়তো, দেখা যাবে, নতুন বিবর্তিত করোনা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে সেই একই টিকা দেওয়া হবে। আর একটা কথা, সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব কি সত্যি রাখা যায়? দেখলাম, বাস থেকে ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক গাদাগাদি ভিড় থেকে ঠেলে নামলেন, তারপর স্কুলে ঢুকেই সব দূরত্ব তৈরি করে বসতে বললেন শিক্ষকরা। ফেরার সময় সেই এক চিত্র। এটা কোন ধরণের বিজ্ঞান? মুখে মাস্ক লাগানো, নাক খোলা। খোলা রাস্তায় মাস্ক তুলে থুতু ফেলে আবার মাস্ক তুলে চলে যাচ্ছে কতো মানুষ, এটা কোন বিজ্ঞান? লোকাল ট্রেনে কীভাবে শারীরীক দূরত্ব রাখা যায়, আজও বুঝিনি। টিকার আপডেট ভীষণ প্রয়োজন। একই অস্ত্রে সব বিবর্তিত ভাইরাসকে ধ্বংস করা যায় না।
লক ডাউনের ফলে মানুষের মধ্যে কম সংক্রমণ হলে, তাতে বিপরীত ফলও হতে পারে। গগনদীপ ক্যাংয়ের কথায়, আগামী দিনে, বিশেষ করে শীতের মরশুমে চিনে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হতে চলেছে। তার কারণ, চিনে ব্যবহার করা টিকার কার্যক্ষমতা খুব ভালো নয়। 
পরিসংখ্যান বলছে, বহু ক্ষেত্রেই চিনে ব্যবহার হওয়া টিকা সফলভাবে কাজ করতে পারেনি। তার উপর চিনে স্বাভাবিক উপায়ে রোগ প্রতিরোধ শক্তিও ভালো ভাবে তৈরি হয়নি। কড়া লকডাউন থাকার ফলে চিনে মানুষের নতুন করোনায় সংক্রমণও তুলনায় কম হয়েছে। ফলে সেখানে রোগ প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হয়নি। 
তিনি বলেছেন, এই যে ওমিক্রন BF.7 নিয়ে এতটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, এটি ভারতে মোটেও নতুন কিছু নয়। বরং এটি ভারতে এটি এবং সঙ্গে XBB নামের উপরূপ অনেক দিন ধরেই রয়েছে। ফলে এগুলির রোগ প্রতিরোধ শক্তিও অনেকের মধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে, বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে মাস্ক পড়া প্রয়োজন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad