Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Advt 720

রবিবার থেকে শুরু গঙ্গাসাগর মেলা, আসতে শুরু করেছেন পূণ্যার্থী, সাধুসন্তরা

Top Post Ad

রজত রায়, গঙ্গাসাগর, ভয়েস ৯
 
 সেদিন আর নেই। তাই আর বলতে হয় না ‘সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার।‘ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় হেলি-যোগাযোগ শুরু হলে, সাগর আরো কাছে চলে আসবে পূণ্যকামী মানুষের। এই কাছে আসা ভালো না খারাপ, তা নিয়ে অনেকের মনে দ্বিমত আছে। অনেক সাধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কষ্টের শেষে যে পাওয়া, না কি অনায়াসে পাওয়া, কোনটা ভালো লাগে? 
বেশিরভাগ সাধু জানিয়েছেন, কষ্ট করে যা পাওয়া যায়, তা অনেক মূল্যবান হয়ে ওঠে। কাজেই কিছু সাধু-সন্ন্যাসীদের কাছে, সেই কষ্টের যাওয়াটা অনেকটাই ‘মিস’ করছেন দেশের নানা আখড়া থেকে আসা সন্ন্যাসীরা। একইসঙ্গে তারা মেনে নিয়েছেন, এই রাজ্যের সরকার তীর্থযাত্রীদের জন্য সাগরে যে ব্যবস্থা করেছে, তা তারা ভাবতেও পারেন নি। 
এবার তো এক টিকিটে সরাসরি গঙ্গাসাগর পৌছানো যাচ্ছে। তাই ভোগান্তি কমেছে তীর্থযাত্রীদের, এটাও বড় পাওনা। কথাগুলো বলছিলেন ভাগল্পুর থেকে আসা এক বৃদ্ধ। তার সঙ্গে এসেছেন প্রায় ৭০ বছর বয়সী জীব-সঙ্গিনী, ছেলে-বৌমা।
 “এবার প্রথম এলেন?” 
হেসে হিন্দিতে জবাব দিলেন ওই বৃদ্ধ, “এ নিয়ে ১০ বার হল। এখানেই হারিয়েছি, আমার এক ছেলেকে। মা গঙ্গাই তাকে আশ্রয় দিয়েছেন। তাই বার বার আসি, সেই ছেলের জন্য। যতদিন বাঁচবো আসবো।“ বৃদ্ধের চোখে জল।
অনাদিকাল থেকে চলে আসা এই মেলা আজও টানে দেশের নানা প্রান্তের পূণ্যকামী মানুষজনদের, সাধু-সন্ন্যাসীদের। কী এক অমোঘ টানে তারা ছুটে আসেন সাগর গ্রাম-পঞ্চায়েতের এই ছোট্ট দ্বীপে। কপিল মুনির আশ্রমে মাথা ঠেকিয়ে শীতের ভোর না হওয়া রাত্রে তারা নেমে পড়েন শীতল জলে। চলে পূণ্যস্নান। পথের ক্লান্তি, হিম-শীতল জল, তীব্র শীতের কামড়, শীতল হাওয়ার দাপট তাদের মন থেকে কেড়ে নিতে পারে না পূণ্যের স্বপ্নটা। 
কতো মানুষ, কতো আকাঙ্ক্ষা, কতো কষ্ট নিয়ে এই সাগরের বেলাভূমিতে মিলিত হন। পাপ নিবেদন করতে, নিজেকে পবিত্র করে নিতে। এর আগে অনেকবার এসেছি সাগর মেলায়। জীবন দেখেছে, জীবনের কলুষতা দেখেছি, মানুষের বিশ্বাস দেখেছি, অবিশ্বাস দেখেছি। সাধু-সন্ন্যাসীদের পাশাপাশি চোখে পড়েছে দেহ-ব্যবসায়ীদের। এমনকি ছিঁচকে চোরও দেখেছি। সবাই আসেন এখানে। যে যার স্বার্থ নিয়ে। ধর্মের বাইরে অধর্ম করতেও একশ্রেণির মানুষ আসেন।
কিন্তু, যেটা আবহমান কাল থেকে চলে আসছে সাগরমেলায়, তা হলো দেশের বড় বড় আখড়ার মহন্ত আর সাধু-সন্ন্যাসীদের। কত বৈচিত্র। মধ্যযুগীয় মানসসিকতায় বিশ্বাসী সাধুদের পাশাপাশি ‘আধুনি সাধু’। ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নানাবিবিধ উপকরণ। আজকের পর আরো জমে যাবে সাগর মেলা। তৈরি হবে অনেক গল্প। কেউ ফিরে যাবেন পূণ্যের থলি পূর্ণ করে, কেউ ফিরবেন খালি হাতে। 
 এবারে শাহী স্নানের পূণ্যক্ষণ ১৪-১৫ জানুয়ারী। ওইদিন রেকর্ড ভিড় হবে বলে মনে করছে প্রশাসন। প্রস্তুতি সারা প্রশাসনের। সিসিটিভির পাশাপাশি নজরদারী চলবে ড্রোন থেকে। এখানে আগত সরকারী গণ-পরিবহনে থাকছে জিপিএস সিস্টেম। যাতে কেউ হারিয়ে না যায়। এবারে রাখা হয়েছে ২৭৫০ টি বাস, ৩২ টি ভেসেল, ১০০ টি লঞ্চ ও গাড়িপারাপারের ৪ টি বার্জ।

Below Post Ad

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Hollywood Movies