কলকাতার রিজেন্ট পার্কে একই পরিবারের সকলে আত্মহত্যা করল কেন?



রজত রায় ও শম্পা দত্ত, ভয়েস ৯, কলকাতাঃ শিউরে ওঠার মতো ঘটনা খাস কলকাতার রিজেন্ট পার্কে। আইনের এক ছাত্রী ও তার বাবা-মায়ের পচা মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। আপাতভাবে, এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা মনে করলেও তদন্তের স্বার্থে অন্য কিছু ঘটার আশঙ্কার দিকটি নিয়েও তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 
জানা গেছে, রিজেন্ট পার্কের ১৯৬/১ আবাসনের দোতলায় ভাড়া থাকতেন বিজয় চট্টোপাধ্যায়। রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার গঙ্গাপুরী প্রাইমারি স্কুলের উল্টৈাদিকে আবাসন। বিজয়বাবু পেশায় ব্যবসায়ী। মাস খানেক আগে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে এই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন বিজয়বাবাবু। এলাকার মানুষরা বলছেন, গত দিন দুয়েক এই পরিবারের কাউকে বাইরে দেখা যায় নি। তবে এই নিয়ে কেউ সন্দেহ করেন নি। কিন্তু, আজ ওই বাড়ির কাছ থেকে পচা গন্ধ বেরোতে থাকলে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তারা বাড়ির কাছে গিয়ে উকিঝুকি দিতে থাকেন। 
দেখা যায়, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়া যাওয়ায়, রিজেন্ট পার্ক থানায় খবর দেওয়া হয়। এরপর, পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। দেখা যায়, বিজয় চট্টোপাধ্যায়, তার স্ত্রী ও মেয়ে ঐন্দ্রিলা চট্টোপাধ্যায় ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন। মৃতদের নাম স্থানীয় সূত্রে খবর দিলীপকুমার চট্টোপাধ্যায় (৫১), রানু চট্টোপাধ্যায় (৪৬) এবং তাঁদের মেয়ে ঐন্দ্রিলা চট্টোপাধ্যায় (২১)।
 এরপর সন্দেহ দেখা যায়। ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় আত্মহত্যার তত্বটা প্রাধান্য পাচ্ছে। পাশাপাশি, এলাকাবাসীর বক্তব্য, বিজয়বাবুর ব্যবসা খারাপ যাচ্ছিল। মেয়ের টিউশন ফিও বাকি ছিল। এই অবস্থায়, আত্মহত্যা করা অসম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেকে। 
তবে, পুলিশের বক্তব্য, ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত জোর দিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই, পুলিশ মৃতদের মোবাইলগুলি সিজ করেছে। সেখানে থাকা কল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঘর থেকে কোন সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। তবে ঘর তল্লাসি করতে গিয়ে তিনজনের আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে। সেখানেই জানা গিয়েছে তিনজন গার্ডন রিচের ব্রহ্মসমাজ লেনের বাসিন্দা। 
 অন্যদিকে, বাড়ির মালিক জয়ন্ত মণ্ডলের জানান, সাত আট মাস আগে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন বিজয় চট্টোপাধ্যায়। প্রতি মাসে ভাড়া ছিল ১১ হাজার টাকা। ফ্ল্যাটের একমাসের ভাড়া বাকি ছিল। মেয়ের টিউশন ফি দিতে হবে বলে সময় চেয়েছিলেন বিজয়। পাঁচমাসের বিদ্যুতের বিলও বকেয়া। ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে এদিন দুপুরে বিদ্যুৎ বিলের টাকার জন্য কথা বলতে এসেছিলেন ফ্ল্যাটের মালিক। ডাকাডাকি করে উত্তর না পেয়ে থানায় গিয়ে পুলিশকে জানান।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad