শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাসী মেলা বা গাজন মেলা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাসী মেলা বা গাজন মেলা। চলবে আগামী একমাস। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে আসা সংসারী মানুষজন এক্মাসের জন্য উত্তরীয় গ্রহণ করে সন্ন্যাসব্রত পালন করবেন। 
 করোনার জন্য ২০২০ ও ২০২১ সালে গাজন মেলা আয়োজন করা যায়নি। তবে ২০২২ সালে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হওয়ায় গাজন মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। 
 কথিত আছে, পূর্বে বাণরাজা এর সূচনা করেছিলেন। তারকাসুর স্বর্গরাজ্য অধিকার করায় দেবতারা দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। তারকাসুরের বর ছিল শুধুমাত্র শিবপুত্রই তাকে হত্যা করতে পারবে। কিন্তু, শিব তখনও বিয়ে করেননি। তিনি তখন যোগাসনে বসে রয়েছেন।
তাই শিবকে বিবাহে রাজি করানোর জন্য ভক্তদেরকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভক্তরা সন্ন্যাস নিলেও শিব তুষ্ট হলেন না। তখন ভক্তরা মহাহবিশ্য করেন। দাঁতে একটা চাল কেটে ফেলে দিয়ে ভক্তরা পাহাড় থেকে ঝাঁপ দেবে বলে ঠিক করে। তখনই ভক্তদের প্রতি সদয় হয়ে তপস্যারত পার্বতীকে বিয়ে করতে রাজি হন শিব। এরপর শিবের সঙ্গে পার্বতীর বিয়ে হয়।
 সংসার আবার অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা পায়। সেই থেকেই সন্ন্যাস গ্রহণের প্রচলন শুরু হয়েছে। একমাস ধরে ভক্তরা সারাদিন উপবাস করার পর রাতে ফলাহার করেন। বান রাজা এই সন্ন্যাস ব্রত প্রচলন করেছিলেন। একমাস ধরে এই ব্রত পালন করার পর চৈত্র মাসের শেষদিনে অর্থাৎ 'নীলষষ্ঠী' বা নীল পুজোর দিন এই ব্রত পালন শেষ হয়৷ 
কথিত যে, চৈত্র মাসের শেষের আগের দিন শিব-পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল৷ এই কারণে এই দিনটিকে 'নীলষষ্ঠী' বলা হয়। গাজন হল শিবঠাকুরের বিয়েকে কেন্দ্র করে গ্রামবাংলার একটি অতিপ্রচলিত লোক উৎসব। 
ভিন্নমতে, বছর শুরুর প্রাক কালে শুভ ফলের উদ্দেশ্যেও পালিত হয় এই উৎসব। গ্রামের 'গা' আর জনসাধারণের 'জন' থেকেই 'গাজন' কথার আগমন। হুগলির তারকেশ্বর ছাড়াও বাঁকুড়া এবং বর্ধমানের বেশকিছু গ্রামে চৈত্রমাসের সংক্রান্তিতে শিবের গাজন পালিত হয়।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad