Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Advt 720

বাংলাদেশঃ আজ মহান স্বাধীনতা দিবস

ভয়েস ৯,ঢাকা ব্যুরোঃ হাজার বছরের সংগ্রামমুখর বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দীর্ঘ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের এই দিনে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীন বাংলাদেশ এবার ৫২ বছরে পা দিল। 
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। 
১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর দীর্ঘ ১৯০ বছরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ ও নির্যাতনের হাত থেকে ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ মুক্তি পেলেও পূর্ব বাংলার মানুষের ওপর জেঁকে বসে নতুন জান্তা। ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে ভাগ করে পাকিস্তান নামের যে রাষ্ট্রের জন্ম হয়- ভৌগলিক বিছিন্নতা, ভাষা ও সংস্কৃতির কোনো মিল না থাকা সত্ত্বেও পূর্ব বাংলাকে তার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
 বাঙালির ওপর চাপিয়ে দেওয়া এই রাষ্ট্রটির যাত্রার শুরুতেই পূর্ব বাংলার মানুষ অত্যাচার, শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন দিক থেকে বৈষমের স্বীকার হয়। তবে এই পরিস্থিতি তখন থেকেই মেনে নেয়নি এ ভূখণ্ডের মানুষ। 
পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলার ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদে নামে, আন্দোলন গড়ে তুলতে থাকে। দ্রুতই এই আন্দোলন সংগ্রামগুলো একত্রিত হয়ে জাতীয় সংগ্রামে রূপ নিতে থাকে, যা স্বাধীন ও মুক্তিসংগ্রামে পরিণত হয়ে রক্ষক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যমে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। আর বাঙালির এই আন্দোলন-সংগ্রামকে সংগঠিত ও নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
পাকিস্তানের শৃঙ্খলে আবদ্ধ বাঙালি জাতি শুরু থেকেই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামে। পাকিস্তানের শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসতে ধাপে ধাপে আন্দোলন গড়ে ওঠে। মহান ভাষা আন্দোলন, ৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুন্থান, ৭০-এর নির্বাচনসহ দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতি ১৯৭১ সালে এসে উপনীত হয়। 
পাকিস্তানের সামরিক, স্বৈরশাসন, অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন এক পর্যায়ে স্বাধিকার ও স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত হয়। আর বাঙালির এ আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান। পাকিস্তানের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামের এক পর্যায়ে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বে আসেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স) বক্তব্যে বাঙালির মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলে স্বাধীনতা অর্জনে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে মরণপণ সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছিলেন তিনি।
 বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ ও গণহত্যা শুরু করে। 
অপারেশন সার্চ লাইটের নামে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। ব
ঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। তাৎক্ষণিকভাবে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান- ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। ....চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। বঙ্গবন্ধু এই ঘোষণা প্রথমে ইপিআর-এর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে এই বার্তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
 বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার সর্বস্তরের মানুষ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির কাছে পরাজিত পাকিস্তানি বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে। 
মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে বাঙালি জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন মহানস্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শেণিপেশার মানুষ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies