বাংলাদেশঃ ৩৩ কেজি মাছের দাম ৩ কোটি

বিশ্বজিৎ মন্ডল, ঢাকাঃ সাগরে গিয়েছিলেন ইলিশ মাছ ধরবেন সেই আশায়, কিন্তু জেলের মন ভরে গেলে অন্য একটি মাছ পেয়েই। পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী ইউনিয়নের উত্তর জুনিয়া গ্রামের জেলে বাদল মাঝির জালে আটকা পরে দুষ্প্রাপ্য একটি ‘ভোল’ মাছ। যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস’। গত সোমবার গভীর সমুদ্রে জালে আটকা পড়া ৩২ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের দুষ্প্রাপ্য মাছটির দাম ৩ কোটি টাকা চাইছেন বলে জানিয়েছেন বাদল মাঝি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভান্ডারিয়ার চরখালী ফেরিঘাটে তিনি সমুদ্র থেকে ট্রলার নিয়ে ফিরেছেন। 
ভান্ডারিয়ার চরখালী ফেরিঘাটে ট্রলার মালিক ও জেলে বাদল বলেন, মাছটি ৩২ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজন হয়েছে। আজ আমি পিরোজপুরের পাড়ের হাট মৎস্য আড়তেই রয়েছি। মাছটির দাম তিন কোটি টাকা চাইব।
তবে পাড়ের হাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জোমাদ্দার বলেন, এই মুহূর্তে এর দাম কত আমরা বলতে পারব না। বাদল মাঝির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ধার-দেনায় পড়েছেন তিনি। এ দিকে এই প্রজাতির মাছ স'ম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভোল মাছ হলো এক প্রকার ওষধি মাছ। এই মাছ একদিকে যেমন ওষুধ হিসেবে কাজ করে তেমনি খেতেও খুব সুস্বাদু। ভোল মাছের পুরো শরীরই ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ভোল মাছের পট'কা থেকে কিডনি রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি করা হয়। এই ওষুধ দিয়ে কিডনির কার্যকারিতা বজায় রাখা হয়। কিডনির পাথর নিরসনে ব্যবহৃত হয় ভোল মাছের পট'কায় থাকা রস। 
ভোল মাছের হৃদয় মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভোল মাছের হৃদয়ে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ নানাবিধ পুষ্টি উপাদান। এটি রোগাক্রান্ত ব্যক্তির জন্য পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তাই এ মাছের হৃদয়কে সোনার হৃদয়ও বলা হয়। ভোল মাছের শরীর নানা পুষ্টি উপাদান ও খনিজ পদার্থে ভরপুর। এই মাছের শরীর থেকেই এমন বিশেষ ধরনের সুতো তৈরি হয় যা দিয়ে মানবদেহে সেলাই করলে ঘা শুকানোর পর সুতো শরীরের সঙ্গে মিশে যায়।
 এই ভোল মাছ থেকে দামি মদ তৈরি করা হয়। সর্বোপরি ওষুধ তৈরিতেই এই মাছ সব থেকে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাই বিশ্বের নামী দামি ওষুধ কোম্পানির কাছে এই মাছের রয়েছে বিশেষ চাহিদা।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad