পলিথিনের নিচে হাঁটু পানিতে পাঠদান করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

বিশ্বজিৎ মন্ডল, ঢাকা: বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জে উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পলিথিনের ছাউনি ঘরে হাঁটু পানিতে শিক্ষার্থীরা নিচ্ছেন পাঠদান। ঝুঁকিপূর্ন ভবনে দুর্ঘটনার আশংকায় ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি ক্রমান্বয়ে কমছে। স্থানীয় অভিভাবকদের দাবি একটি সাইক্লোন-কাম স্কুল ভবন নির্মাণের। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের অজোপাড়াগায়ে চিংড়াখালী ইউনিয়নের সিংজোড় গ্রামে ১৪৪নং গাজী আজিজুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৪৯ সালে স্থাপিত হয় এ বিদ্যালয়টি। শিক্ষার্থী রয়েছে ৬৮ জন। ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেনীতে ক্লাশ চলছিলো মাঠের মধ্যে পলিথিন টাঙ্গানো হাঁটু পানিতে। একদিকে পূর্নিমার অতিরিক্ত জোয়ারের পানি। অস্থায়ী শ্রেণীকক্ষের ঘরে ছাত্র-ছাত্রীদের হাঁটু পানিতে ভিজে পাঠদান দিচ্ছেন শিক্ষকরা। মাঠের চারদিকে পানি থৈ থৈ করছে। তবুও থেমে নেই পাঠদান। বৈরি আবহাওয়াও মধ্যেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি চোখে পড়ারমত। 
৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সৈকত হাজরা, অরুন চন্দ্র মিন্ত্রীসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, কবে হবে আমাদের বিদ্যালয়ের নতুন ভবন? এভাবে পানিতে ভিজে ক্লাস করতে খুবই কষ্ট হয়। বড় স্যারেরা আমাদের এ কষ্টের কথা কি জানতে পারবেন! এমন প্রশ্ন তুলেছেন কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা। স্কুলের শ্রেণি শিক্ষক মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে এরকম দিনের পর দিন পার করছি। শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য নতুন ভবন দরকার। ১৯৯৫ সালে সরকারিভাবে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট নতুন ভবন হলেও সে ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ন। সম্প্রতি শ্রেণীকক্ষের পলেস্তরা খসে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। অভিভাবকরা আতংকে স্কুলে পাঠাতে চাচ্ছে না ছেলে মেয়েদের। এছাড়া ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল। শ্রেনীকক্ষের গ্রেড ভিম ভেঙ্গে পড়ে বেড়িয়ে এসেছে রড। দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে দুই শিক্ষার্থী। ঝুঁকিপূর্ন এ ভবনটিতে পাঠদান না করার জন্য সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টার সহকারি শিক্ষা অফিসার পরিদর্শন করে লিখিতভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। এখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যালয়টি। 
 অভিভাবকদের দাবী,গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অস্থায়ী পলিথিনের ঘরে এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস হচ্ছে। একটি সাইক্লোন কাম-স্কুল ভবন নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী ইউনিয়নের ৩ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমীর কুমার চক্রবর্তী বলেন, বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের পলেস্তরা খসে পড়ে দুর্ঘটনার পরপরই। সহকারি শিক্ষা অফিসার পরিদর্শনে এসে ভবনটির শ্রেণীকক্ষে পাঠদান না করার জন্য লিখিত নির্দেশনা দিয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সহ নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। এ সর্ম্পকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ জালাল উদ্দিন খান বলেন, বিদ্যালয়টি পরিত্যাক্ত ঘোষণার জন্য আবেদনে সুপারিশ প্রেরণ করা হয়েছে। নতুন ভবনের জন্য তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করে অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হবে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad