গ্রেপ্তার উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে নিয়ে বিষ্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের

ভয়েস ৯, কলকাতাঃ “দলের প্রতি ওই উপাচার্যের কোন আনুগত্য ছিল বলে আমি জানিনা, তবে ব্যক্তির প্রতি থাকতে পারে। ওর জন্য উপাচার্য পদের গরিমা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমি এ জন্য লজ্জিত। কারণ, একজন উপাচার্য দূর্নীতির জন্য জেলে জাছেন।“ এভাবেই সিবিআই এর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য ও এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের সম্পর্কে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় এই উক্তি করেন। একটি বাংলা নিউজ চ্যানেলে সৌগতবাবু সাফ বলেন, সুবীরেশ ভট্টাচার্য কীভাবে উপাচার্য হয়েছিলেন, তা তিনি জানেন না। তার কথায়, “ওনার কী এমন বিশেষ গুণ ছিল যে একধারে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান, উপাচার্য, শ্যামাপ্রসাদ কলেজের অধ্যক্ষ? তিনি তো বোটানির লোক ছিলেন। তার গ্রেপ্তারে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি যেমন হয়েছে তার চেয়ে বড় ক্ষতি উপাচার্য পদের গরিমা নষ্ট হওয়া।“ জানা গেছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেটের সদস্য হিসাবে গভর্নিং বডির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে ডি লিট দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এই সুবীরেশ ভট্টাচার্য। পরে, তাকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয় তাঁকে।
শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা জানাচ্ছেন, বাম আমলে সিপিএম ঘনিষ্ঠ ছিলেন সুবীরেশ। সেই যোগাযোগ কাজে লাগিয়েই ত্রিপুরা থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসেন তিনি। তবে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তার। মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। অনেকে বলেন, মানিকের সৌজন্যই ২০১৩ সাল থেকে কলকাতার একাধিক কলেজের পরিচালন সমিতিতে জায়গা পান সুবীরেশ। ২০১৪ সালে এসএসসি-র চেয়ারম্যান হন তিনি। ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। মাঝে পার্থ চট্টোপাধ্যায় একবার তাঁকে পদ থেকে সরালেও, ফের সেই পদে আসীন হন বলে দাবি শিক্ষামহলের একাংশের।
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে প্রাক্তন বিচারপতি আর কে বাগের কমিটির দেওয়া রিপোর্টেও উল্লেখ ছিল সুবীরেশের নাম। সিবিআই সূত্রে খবর, এসএসসি দুর্নীতি তদন্তে একাধিক জনকে জিজ্ঞাসাবাদে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের নাম উঠে আসে। সেই সূত্র ধরেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য শিলিগুড়িতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। বেশ কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করেন। একাধিকবার সুবীরেশ ভট্টাচার্যের দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় সিবিআই। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির দায় একপ্রকার কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেললেন-ই বলা চলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সিবিআই জেরায় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের চাঞ্চল্যকর দাবি, 'ডিপার্টমেন্ট থেকে ফাইল আসত। আমি শুধু সই করতাম। আমার খুব সীমিত ক্ষমতা ছিল। তাঁদের উপর ভরসা রেখেছিলাম।'

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad