সামনের বছর পঞ্চায়েত ভোট, : ঘাসফুল-পদ্মফুলের লড়াই এ, দূর্নীতি কারো হাতিয়ার, কারো গলার কাঁটা

রজত রায়ঃ সবাই চাইছে বুথস্তরে শক্তি বাড়াতে আর দূর্নীতিকে পাখির চোখ করতে। কিন্তু একটু অন্যভাবে। পদ্মফুল যেখানে ঘাসফুলের দূর্নীতিকে হাতিয়ার করে গ্রামের মানুষের মন জয় করতে মরিয়া, ঠিক তেমনি দলের দুর্নীতিগ্রস্তদের চিহ্ণিত করে, পঞ্চায়েত ভোটে তাদের টিকিট দিতে নারাজ ঘাসফুল। ফলে, বলা যেতেই পারে, দূর্নীতিকে সঙ্গে নিয়েই এগোতে চাইছে দুই পক্ষ। আর এর মাঝে থেকে লাল ঝান্ডা তাদের ভেঙ্গে যাওয়া ঘর গোছানোর জন্য উভয়ের দূর্নীতিকেই হাতিয়ার করেছে। এই তিন দলের মাঝে হারিয়ে  যাওয়া কংগ্রেস  এখন মাটি পেতে মরিয়া।

 একদিকে সাংগঠনিক দুর্বলতা ও কিছুটা ঘরোয়া কোন্দল নিয়েই বুথস্তরে নিজেদের আধিপত্য বাড়াতে পথে নামতে চলেছে বং বিজেপি। লক্ষ্য ২০২৩ এর প্নচায়েত নির্বাচন। নভেম্বর মাসের প্রথম থেকেই শিক্ষাস্তরে লাগাম ছাড়া দুর্নীতির বার্তা নিয়ে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নামতে চলেছে পদ্মফুল শিবির। ইতিমধ্যেই নির্দেশ এসেছে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত বুথ কমিটি তৈরি করে ফেলতে।

জানা গেছে, স্থানীয় স্তরে পঞ্চায়েতের দুর্নীতি গুলিকে চিহ্নিত করে সেগুলিকে প্রচারের হাতিয়ার করতে চলেছে বিজেপি। পাশাপাশি থাকছে কয়লা কেলেঙ্কারী, গরু পাচার থেকে স্কুলে নিয়োগে দুর্নীতি। রীতিমতো মাটি কামড়ে লড়াই করার পরিকল্পনা করা হয়েছে দলের ভিতরে। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে যে কোর কমিটি তৈরি হয়েছে, তার প্রধান করা হয়েছে রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে। কতজনকে প্রার্থী করা হবে, কত আসনে জিততে পারা যাবে তা নিয়ে বৈঠকও চলছে। এমনকি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অন্য দল থেকে কেউ যদি বিজেপিতে আসতে চায়, তাদের জন্যও দরজা কিছুটা খোলা রাখার কথা ভাবা হয়েছে।

অন্যদিকে, তৃণমূলের অন্দরমহল এখন বিব্রত উপরতলার কিছু নেতা-মন্ত্রীদের দুর্নীতি আর নীচুতলায় একশ্রেণির নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে। ২১ জুলাই থেকেই এ ব্যাপারে তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা ব্যানার্জী ও অভিষেক ব্যানার্জী দলকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তেল দিয়ে টিকিট পাওয়ার যুগ শেষ। একদিকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই আর অন্যদিকে দুর্নীতিগ্রস্তদের ছেটে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। এমনিতেই দলের উপর মহলে খবর গেছে, কীভাবে একশ্রেণির নেতা-কর্মী পঞ্চায়েত স্তরে নানা দুর্নীতিতে সামিল। এদের অনেককে জানিয়ে দেওয়া হলেও, এখনো ঝাড়াই-বাছাই এর কাজ শেষ হয়নি। এই মুহুর্তে তৃণমূলের কাছে মাথাব্যথার কারণ দুটো। একটা দলীয় নেতাদের দুর্নীতি, অন্যদিকে দলের ছোট-খাটো নেতাদের ইগোর লড়াই, যা কর্মীদের ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে।

সূত্র মারফত জানা গেছে, দলের দু-চারজন বিধায়কের কাজকর্মের ব্যাপারে নজর রাখছে দল। তাদের বেশ কিছু আচরণ ও জীবন-যাপন দলের কর্মীদের অসন্তোষের কারণ হচ্ছে। বহু তৃণমূল কর্মীর মধ্যেই রয়েছে এই অভিযোগ। তাই বিজয়া সম্মিলনী করতে গিয়ে নেতা-বিধায়কদের বলতে হচ্ছে, দলের নেত্রী মমতা ব্যানার্জী, নিজেদের মধ্যে কাজিয়া করে দলের ক্ষতি করবেন না।  কাজেই, এই মুহুর্তে বুথস্তরে দলকে চাঙ্গা করাটাই ঘাস ও পদ্মফুল দু দলেরই মূল লক্ষ্য।

 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad