নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলিঃ তারকেশ্বর থানার মীর্জাপুরে ছেলেধরা সন্দেহে ৫ জনকে আটকে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠল মীর্জাপুর এলাকা। আটকদের উদ্ধার করতে গেলে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ, তাদের লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় ইট-পাথর। উত্তেজিত জনতাকে সামলাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ, তাদের মারমুখী চেহারা দেখে প্রথমে পুলিশ পিছিয়ে গেলেও পরে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে নিয়ে আসা হয় বিরাট পুলিশ বাহিনী ও ফায়ার ব্রিগেড।
তারকেশ্বর থানার
বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডের কাছ থেকে কিছুটা দূরেই শিবতলা। আজ দুপুরে জনা ৬
বহিরাগতকে এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় মানুষজন। প্রথমে তারা বিষয়টির মধ্যে
সন্দেহজনক কিছু দেখেনি। মূলতঃ এলাকা থেকে প্লাস্টিকের প্যাকেট সংগ্রহ করে নিয়ে
যাওয়ার জন্যই তারা এসেছিল বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু, আচমকাই এলাকার কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি অন্যান্য বাসিন্দাদের বলে, ওরা ছেলেধরা, ২ জন বাচ্চাকে লজেন্সের লোভ দেখিয়ে
ম্যাটাডোরে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বিক্রি করে দেবে বলে। আর এই ঘটনাতেই তৈরি হয়
উত্তেজনা। ছুটে যায় সবাই ম্যাটাডোর লক্ষ্য করে। ধরে ফেলে ৫ জনকে, এদের মধ্যে একজন
মহিলা। পরিস্থিতি খারাপ দেখে ১ জন পালিয়ে যায়।
জানা যায়, এরপর
উত্তেজিত জনতা ম্যাটাডোরটি ভাংচুর করে। গাড়িতে রাখা প্লাস্টিকের প্যাকেট টেনে
নামিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আর ম্যাটাডোরে আসা ৫ জনকে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে।
এইরকম পরিস্থিতে
ওই আটক ব্যক্তিদের উদ্ধার করার জন্য তারকেশ্বর থানা থেকে ছুটে যায় পুলিশ বাহিনী,
খবর যায় দমকলে। দমকলের ইঞ্জিন ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। সব মিলিয়ে তখন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি গ্রাম জুড়ে। একটা উড়ো খবরকে নিয়ে যে পরিস্থিতি এত খারাপ হতে পারে বোঝা যায়নি,
বললেন স্থানীয় এক গ্রামবাসী।
পুলিশ গিয়ে
প্রথমে উত্তেজিত জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, এরপর আচমকাই তারা মারমুখী হয়ে
যায় বলে অভিযোগ। শুরু হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি। পুলিশ সেই পরিস্থিতিতেও ওই
আটক ৫ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী।
আলাপ-আলোচনায় কোন ফল না মেলায়, এরপর পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে হটানোর জন্য ফায়ার
ব্রিগেড থেকে জল ছুঁড়তে থাকে, তাতেও পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কাঁদানে
গ্যাস ছুঁড়ে উত্তেজিত জনতাকে হটিয়ে দেয়। এরপর পুলিশ ওই আটক ৫ জনকে তারকেশ্বর থানায়
নিয়ে আসে। অভিযোগ পুলিশের গাড়িতে ধাক্কা লাগে একজন ব্যক্তির। তাকে তারকেশ্বর গ্রামীন
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখনো গ্রামে উত্তেজনা রয়েছে। বসানো হয়েছে পুলিশ-পিকেট।