আজ সেই বাবিয়া নেই। দীর্ঘ জীবনের কাজ শেষে সে চলে গেছে অনন্তলোকে, রেখে গেছে এক দৃষ্টান্ত, হিংসা দিয়ে কিছু হয়না, ভালোবাসাই আসল ধর্ম। তাই আজ কেরলে তার মরদেহকে ঘিরে শ্রদ্ধা দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, ভক্তরা। কুমীর জীবন নয়, বাবিয়া রেখে গেছে প্রেমের এক অন্য উপাখ্যান।
ভয়েস ৯, নিউজ ডেস্কঃ অনেকেরই আজও মনে আছে সিমলিপালের সেই বাঘিনী ‘খৈরী’র কথা, যে তার মানুষ মাকেই মা মনে করত আর মানুষ বাবাকে বাবা। তাদের কাছেই থাকতো, ঘুমাতো। আর আজ আর একজনের কথা মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, মাংশাসী প্রাণীরা মাঝে মাঝে এমন আচরণ করে, যে মানুষ কে ছাপিয়ে অনেক বড় হয়ে যায় ঐ না-মানুষরা। এমনকি সেই না-মানুষের জন্য চোখের জলও বিসর্জন করে, তার মৃত্যুতে জানায় শ্রদ্ধা, স্বতঃস্ফুর্তভাবে।
ঠিক সেটাই দেখালো কেরলের বাবিয়া। কেরলের কাসারগড় এলাকার শ্রী আনন্দপদ্মনাভ মন্দিরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বিদায় নিয়েছে বাবিয়া, চিরকালের জন্য। বাবিয়া কোনদিন মাছ স্পর্শ করেনি, খায়নি মাংস। নিরামিষ খাবারেই কাটিয়ে দিয়েছে জীবনের ৭৫ বছর। মন্দিরের ৭৫ বছরের সাক্ষী সে।
বাবিয়া একটা কুমীর। ঠিকই, কুমীর। কবে কীভাবে সে এসেছিল এলাকার শ্রী আনন্দপদ্মনাভ মন্দিরের সরোবরে কেউ জানেন না। কেউ কিছু প্রসাদ দিলে সে এসে যেত ঘাটের কিনারায়। সাগ্রহে খেত পবিত্র প্রসাদ। তার পাশে খেলে বেড়াত মাছের সারি। কারো ক্ষতি করত না। সকাল বিকেল মন্দিরের পুজোর পর তাকে ভোগ দেওয়া হত। মন্দিরের পুরোহিত নিজের হাতে বাবিয়াকে খাইয়ে দিতেন।
আজ সেই বাবিয়া নেই। দীর্ঘ জীবনের কাজ শেষে সে চলে গেছে অনন্তলোকে, রেখে গেছে এক দৃষ্টান্ত, হিংসা দিয়ে কিছু হয়না, ভালোবাসাই আসল ধর্ম। তাই আজ কেরলে তার মরদেহকে ঘিরে শ্রদ্ধা দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, ভক্তরা। কুমীর জীবন নয়, বাবিয়া রেখে গেছে প্রেমের এক অন্য উপাখ্যান।