নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলিঃ অনেক কিছু প্রশ্ন অজানা। তার তদন্ত চলছে। কিন্তু, এর মধ্যেই জাঙ্গিপাড়া থানার পুলিশ কৃষ্ণপুর গ্রামের নাবালিকার রহস্যমৃত্যুতে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে ৪ জনকে। এই ৪ জনের মধ্যে ১ জন ওই কিশোরীর পরিবারের আত্মীয়।
প্রথম থেকেই, নাবালিকার অন্তর্ধানকে ঘিরে একটা আশংকা ছিল পরিবারের, তাই তারা ছুটে গিয়েছিল জাঙ্গিপাড়া থানায়। সেখানে গিয়ে বাড়ির লোকজন সবকিছু খুলে বলেন। একইসঙ্গে পুলিশের কাছে তাদের আশংকার কথা জানান। কিন্তু পুলিশ তাদের কথায় কোন ‘কান’ দেয়নি। অন্ততঃ এরকমই অভিযোগ, মৃতা কিশোরীর বাড়ির লোকজনদের। তাদের কথায় দশমীর রাতেই যদি পুলিশ অনুসন্ধান করা শুরু করত, তাহলে হয়ত, তাদের এতবড় ক্ষতি হতো না।
এরপর, শ্রীহট্টের একটি ঝিল থেকে ওই কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। তারা সাফ জানিয়ে দেন, পুলিশের উপর আস্থা নেই। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ কুকুর, ড্রোন দিয়ে এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। এমনকি, পুলিশ গ্রামবাসীদের কাছে ৪৮ ঘন্টা সময়ও চেয়ে নেয়। আর তার রেশ কাটতে না কাটতেই এই গ্রেপ্তার। এটা নিঃসন্দেহে পুলিশের সাফল্য। কিন্তু, গ্রামবাসীরাদের এখনো সেইভাবে আস্থা ফেরেনি পুলিশের উপর। কারণ, এখনো, পুলিশ ধৃতদের নাম, পরিচয় জানায় নি। কীভাবে তারা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত তাও জানা যায়নি।
অবশ্য, মনে করা হচ্ছে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ এখন সব কথা প্রকাশ করছে না, এমনকি বাড়ির লোকেদের কাছেও।
জানা গিয়েছিল, ওই সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।সাইকেল নিয়ে দশমীর দিন বেরিয়েছিল। আর ফিরে আসে নি। আর এব্যাপারে প্রথমে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি জাঙ্গীপাড়া থানা। কিন্তু, ঘটনা ক্রমশঃ জটিল রূপ নেয়, যখন কেটে যায় আরো তিনটে দিন।
অভিযোগে জানা গেছে, প্রথমে জাঙ্গীপাড়া থানা বাড়ির লোকের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেনি। বরঞ্চ, তাদের যে কথা বলা হয়, তা মোটেই ওই পরিস্থিতে শোভন নয়। প্রাথমিকভাবে, অনেকে মনে করেছিলেন, মেয়েটি জলে পড়ে গিয়েছিল, কিন্তু প্রশ্ন, ওই জুতোজোড়া কার? যদি জলেই পড়ে যায়, সাইকেল সমেত কেন? তাহলে , যে এই কাজটা করেছে, সে কোন প্রমান রাখবে না বলেই, সাইকেলটাও ঝিলেই ফেলে দিয়েছে, নয়তো, সাইকেলটা নিয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, পুলিশ প্রথমে সক্রিয় হলে অনেক কিছুই হত। এমনকি, গুরুত্বপূর্ণ প্রমানও পাওয়া যেত। ঝিলের পাশে উদ্ধার হওয়া জুতো কার? এই প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি। অনেকে বলছেন, আততায়ী, জুতো খুলে ঝিলের জলে নামে, তারপর তাড়াহুড়োয় জুতো ফেলে পালায়। কিন্তু, এরপর, ওই আততায়ী তার জুতোর খোঁজে আর ফিরে আসেনি কেন? পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তারা বেশ কয়েকজনকে সম্ভাব্য আততায়ীর তালিকায় রেখেছেন, কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে, একটা কথা পরিষ্কার, আততায়ী সম্ভবতঃ পরিচিত হলেও হতে পারে। এর পিছনে বেশ কিছু যুক্তি আছে, কিন্তু পুলিশ সে সব প্রকাশ করছে না, অন্ততঃ এই মুহুর্তে।