দেশের যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনা গুলি যেন পর্ণ-সাইট থেকে অনুসরণ করা হচ্ছে, অভিমত মনস্তাত্বিকদের

এখানে যে ছবিগুলি ব্যবহার করা হয়েছে, তার সঙ্গে প্রতিবেদনের কোন সম্পর্ক নেই।


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
আজ একটা খবর সামনে এল। খবরটা এই রকম -মালাডের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের জিমে এক মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগে ৩৫ বছর বয়সী এক ফিটনেস ট্রেনারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ওই মহিলা তার অভিযোগে বলেছেন যে অভিযুক্ত তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অজুহাতে তাকে শালীনভাবে স্পর্শ করেছিল এবং এটি বেশ কয়েকবার ঘটেছে। এছাড়া সারা দেশ জুড়ে সাম্রতিক প্রেম-পরিণয়-ধর্ষণ-খুনের ঘটনা গুলির দিকে তাকালে বোঝা যাবে, এক ‘পারভার্টেড’ মানসিকতার প্রতিফলন। 
এক নারীর সঙ্গে দুই পুরুষের প্রেম ও পরিণতিতে খুন, দুই নারী ও এক পুরুষের প্রেম ও পরিণতিতে খুন, কিশোর প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহিতা রমণীর প্রেম ও পরিণতিতে খুন, সন্তানের মায়ের সঙ্গে কিশোর প্রেমিকের প্রেম, ধর্ষণ, খুন আকছার ঘটছে। যেটা বছর কয়েক আগেও দেখা যেত না। সম্প্রতি, আর একটি ঘটনা মানুষকে নাড়া দিয়েছে, তা হল, একইসঙ্গে মা ও মেয়ের সঙ্গে প্রেম ও যৌনতা ও পরিণতিতে খুন। ঘটনাগুলো যেন বেশ কিছু পর্ণ সাইটের হুবুহু রূপ, যা বর্তমান প্রজন্মের অল্প-বয়সী ছেলে-মেয়েদের প্রভাবিত করছে বলে মনে করছেন বহু মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ। 

এই পর্ণ-সাইটগুলো কতটা ক্ষতি করছে অল্প-বয়সীদের? 

ড. অখিলেশ দাস জানালেন, “দেখুন, কেন্দ্রিয় সরকার বহু পর্ণ সাইট বন্ধ করে দিয়েছেন যেগুলো শিশুদের ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু, এটা একমাত্র রাস্তা নয়। কারণ, প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন। আর, মোবাইল বা স্মার্ট ফোন অল্পবয়সীদের হাতে হাতে। চলছে তাদের বাবা-মায়ের কিনে দেওয়া সিম ব্যবহার করেই। অল্পবয়সীরা সোস্যাল নেট-মাধ্যমে ফেক নামে একাউন্ট খুলে ফেলে প্রেম করছে। এ সব তাদের মনে জন্ম দিচ্ছে বিকৃত যৌনতার। অল্পবয়সী ছেলেরা বয়স্ক মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্কের পর্ণ দেখে, সম্পর্ক তৈরি করছে। উলটো দিকে, কিছু বিকৃত-কাম মহিলা অল্প-বয়সীদের সঙ্গে সম্পুরকে লিপ্ত হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে না পারলে, সমাজে এর প্রতিফল তো পড়বেই, খুন-ধর্ষণের ঘটনাও বাড়বে। 


কাবেরী শাসমল, মনস্তত্বের এক অধ্যাপিকা। তার কথায়, বিকৃত যৌনাচার আগেও ছিল, এখনো আছে। আগে লুকিয়ে-চুড়িয়ে হতো। এখন প্রকাশ্যে। কিন্তু, যেটা ভয়াবহ, সেটা হলো, পর্ন-ছবির সহজলভ্যতা। এটার জন্য, একশ্রেণির আত্মীয়, এমনকি বাবা-মা কেও দায়ী করা যায়। তারা ছেলে-মেয়েদের স্মার্ট ফোন ও নিজেদের সিম কার্ড তাদের হাতে তুলে দেন কম বয়সেই। অনায়াসে সাধারণ বাটন ফোন দেওয়া জেতে পারত। আর মানসিক বিকাশ যেভাবে যৌনতার  দিকে মোড় নিয়েছে, তাতে সোশ্যাল মিডিয়া বা পর্ণ সাইটের ভূমিকা কম নয়। এখান থেকে সরিয়ে আনা কঠিন। এর জন্য চাই কঠিন মানসিক প্রতিজ্ঞা। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এখন যেভাবে পার্টি-প্রবণতা বাড়ছে, তা খুব একটা ভালো দিকে নিয়ে যাচ্ছে না। আমরা দেখেছি, কীভাবে বহু নাবালিকা মেয়েকে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে এনে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে।


 ড. অপরেশ চাকলাদার বলেন, “দেখুন, আইন বা প্রশাসন এগুলো বন্ধ করতে পারবে না। এগুলো বন্ধ করতে হবে বাড়ি থেকেই। অভিভাবকদের কড়া হতে হবে। বাড়িতে জোর দিতে হবে সম্পর্কের উপর। সমর্ককে সম্মান জানাতে হবে। নাহলে কিছু হবে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি, বাবা মেয়েকে ধর্ষণ করছে। এগুলো, নিঃ সন্দেহে একশ্রেণির পর্ণ ছবির প্রতিফলন। কিন্তু সেই বাবা যদি সন্তান ও পিতার সম্পর্ককে মান্যতা দিতেন, তবে কি এই ধরণের ঘটনা ঘটত? আসলে, আমরা হারিয়ে ফেলছি মূল্যবোধ, চেতনা, বন্ডিং। আর এর কুফল তো ফলবেই। তাই সবাইকে নিয়ে বের করতে হবে মুক্তির উপায়। তবে, এগুলো আখনো শতকরার নিরিখে নগণ্য, তাই এখনই সতর্ক হবার সময়।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad