কেদারনাথ কপ্টার দুর্ঘটনা: কী কারণে ঘটল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা?

 


কেদারনাথের কাছে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। প্রাথমিকভাবে, দুর্বল দৃশ্যমানতাকে দায়ী করা হলেও, বিশেষজ্ঞরা আরো কিছু প্রশ্ন তুলেছেন।

ভয়েস ৯, নিউজ ডেস্কঃ কেদারনাথ মন্দির থেকে উত্তরাখণ্ডের গুপ্তকাশীতে উড়ে যাওয়ার পথে ৬ জন যাত্রী ও পাইলটকে নিয়ে ভেঙ্গে পড়ে আরিয়ান এভিয়েশনের বেল-৪০৭ হেলিকপ্টারটি। ভেঙ্গে পড়ার আগে আগুন ধরে যায়। তারপর কেদারনাথ থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে গারুদ ছাট্টির দেব দর্শিনীতে সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ এটি আছড়ে পড়ে। মারা যান সকলেই। কিন্তু কী কারণে এই দুর্ঘটনা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে তদন্তের প্রাথমিক কাজ। 

কিন্তু প্রাথনিকভাবে যে তথ্যটি সামনে আসছে, তা বেশ ভয়াবহ। দেখা গেছে, এই দুর্ঘটনাটির সঙ্গে ৪ মাস আগে বম্বে হাইয়ের কাছে পবন হংস অফশোর দুর্ঘটনার বেশ মিল আছে। পবনহংস দুর্ঘটনায় ৪ জন মারা গিয়েছিলেন। এই দুটি হেলিকপ্টারের পাইলটরা ছিলেন যথেষ্ট সিনিয়র। কিন্তু এরা দুজনেই নতুন ধরনের হেলিকপ্টার চালাচ্ছিলেন। এর অর্থ হল, এতদিন যে ধরণের চপার তারা চালিয়ে আসছিলেন, সেটির পরিবর্তে তাদের অন্য ধরণের চপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাই ভেঙ্গে পড়া চপার সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা কম ছিল।

উত্তরাখন্ড দুর্ঘটনায় মৃত পাইলট ক্যাপ্টেন অনিল সিং প্রায় ১৫ বছর ধরে একজন অফশোর পাইলট ছিলেন। তার কাজ ছিল মাল্টি-ইঞ্জিনের ডাউফিন এন-৩ চপারকে বোম্বে হাইতে নিয়ে যাওয়াগত সেপ্টেম্বরে আরিয়ান এভিয়েশনে যোগ দেন তিনি, যেখানে তিনি শুরু করেন সিঙ্গল ইঞ্জিনবিশিষ্ট বেল ৪০৭ এর উড়ান। প্রশ্ন উঠেছে, একজন অফশোর পাইলটকে পাহাড়-উড়ানে দক্ষ করে তোলার জন্য কী ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল?

জানা গেছে, তিনি একজন আর্মি পাইলট ছিলেন এবং তাই তিনি পাহাড়ে উড়ে যেতেন, তবে এটি তার কর্মজীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল। একটি মাল্টি-ইঞ্জিন হেলিকপ্টারে সমুদ্রের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া এবং সিঙ্গল-ইঞ্জিনের হেলিকপ্টারে পাহাড়ি ভূখণ্ডের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া দুটি খুব ভিন্ন ধরণের উড়ান। আর এর জন্য দরকার বিশেষ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিনিয়র অফশোর পাইলট বলেন, "অফশোর ফ্লাইং-এ নিযুক্ত মাল্টি-ইঞ্জিন হেলিকপ্টারগুলি অটোপাইলট এবং অন্যান্য  ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত। এটি নেভিগেশনের জন্য ককপিট যন্ত্রগুলির উপর নির্ভর করে তাই এক্ষেত্রে দুর্বল দৃশ্যমানতা পাহাড়ি ভূখণ্ডের উপর সিঙ্গল-ইঞ্জিনের হেলিকপ্টার চালানোর সময় যতটা বড় সমস্যা তৈরি করে, এক্ষেত্রে তা করে না।

ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে খারাপ আবহাওয়া এই দুর্ঘটনায় পিছনে বড় কারণ। 

প্রতীকি চিত্র

আরিয়ান এভিয়েশনের সিইও এবং অপারেশনস প্রধান ক্যাপ্টেন আর কে নেগি বলেছেন, "চপারটি যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার জন্য কেদারনাথে অবতরণ করেছিল এবং যাত্রীদের একটি নতুন দল নিয়ে গুপ্তকাশীতে ফিরছিল। আবহাওয়া এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী নাও হতে পারে কারণ আবহাওয়া যদি খারাপ হত, তবে কেদারনাথে অবতরণের পরপরই পাইলটটি উড্ডয়ন করত না।"

উল্লেখ্য, গত ৩১ মে তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি হেলিকপ্টার কেদারনাথ হেলিপ্যাডে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে হার্ড ল্যান্ডিং করে। এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়,  ফলে ডিজিসিএ দ্বারা একটি নিরাপত্তা নিরীক্ষা করা হয়েছিল।


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad