বেজিংয়ের কঠোর কোভিড নিয়ে প্রায় এক বছর ধরে হতাশা এবং প্রায় নির্বিচারে কোয়ারেন্টাইন এর ফলে বিক্ষোভ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। অস্থির হয়ে পড়ছে চীনের পরিস্থিতি। গত সপ্তাহে, ঝেংঝৌ, উরুমকি, হাইঝু, জিয়ান, নানজিং, বেইজিং, ল্যানঝু, চ্যাংশা এবং কোর্লাতে কোভিড নীতির বিরুদ্ধে ছোট এবং বড় আকারের বিক্ষোভ দেখা গেছে। এই বিক্ষোভ প্রথম দেখা যায় ঝেংঝৌতে ফক্সকন কারখানায়। ঝেংঝৌতে ফক্সকন কারখানার শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন যে তাদের কোভিড-পজিটিভ শ্রমিকদের সঙ্গে ডরমিটরিগুলতে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল।
অভিযোগ, শ্রমিকরা প্রতিবাদ করতে রাস্তায় জড়ো হলে হাজমত স্যুট পরিহিত পুলিশ তাদের উপর হামলা চালায়। আর তার পরেইসংঘর্ষ শুরু হয়।
জানা গেছে, সংঘর্ষের ভিডিওগুলি টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে এবং চীনে নিষিদ্ধ চ্যাট গ্রুপগুলিতে শেয়ার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৯ মিনিটে উরুমকির তিয়ান শান জেলার একটি আবাসিক ভবনে আগুন লাগে এবং কোভিড বিধিনিষেধের কারণে লোকজন ভবনের ভেতরে আটকা পড়ে। তারা পালাতে পারেনি। আগুন ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে, সাহায্যের জন্য ভিক্ষা করা বাসিন্দাদের চিৎকার ক্যামেরায় ধরা পড়ে। উরুমকি এই ঘটনায় ১০ জন মারা গিয়েছিল।
আগুনজনিত মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ এতটাই তীব্র ছিল যে উরুমকি এবং শিনজিয়াংয়ের আরও কয়েকটি শহরের বাসিন্দারা ব্যাপক নজরদারির মধ্যে থাকা সত্ত্বেও প্রতিবাদ করতে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। উরুমকি বিক্ষোভের পর আরও প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে, স্থানীয় সরকার ঘোষণা করে যে শহরের লকডাউন শিথিল করবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উরুমকিতে কঠোর জিরো-কোভিড নীতির কারণইে এই মৃত্যু ঘটে। শনিবার, উরুমকির নিহতদের প্রতি সহানুভূতির বহিঃপ্রকাশ সাংহাইতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। সাংহাইয়ের উলুমুকি রোডে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। যেখানে জড়ো হওয়া প্রায় ১,০০০ লোক চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়
। উলুমুকিতে কোভিড-১৯ লকডাউনের অধীনে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাইরাসটির বিস্তার রোধে এবং সরকার কর্তৃক নির্বিচারে লকডাউনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে, এবং লোকেরা রবিবার ভোর ৩টার দিকে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। মানুষজনকে হাতে ফুল নিয়ে দেখা গেছ।তারা কোভিড বিধিনিষেধের প্রতিবাদ জানিয়ে চীনের জাতীয় সংগীত গেয়েছিল, "উঠে দাঁড়াও, যারা ক্রীতদাস হতে চায় না।"