নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষের একটা বিরাট অংশ, বিশেষ করে ব্যবসায়ী, কৃষিজীবী ও খেটে-খাওয়া মানুষ, ছাত্র-সমাজ ও ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। অথচ একশ্রেণির মিডিয়া মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে 'গেল গেল' রব তুলেছেন বলে সংবাদ ভয়েসে ৯ কে জানিয়েছেন মানুষজন।
তাদের বক্তব্য, এই মুহুর্তে যেখানে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তখন থেকেই যদি জনগনকে আটকে ফেলা হতো নানা বিধি নিষেধে, তাহলে সামগ্রিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হতেন সাধারণ মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী, শ্রমজীবী মানুষ।
একসময়, দুর্গাপুজোর সময়, গতবারের গঙ্গাসাগর মেলার সময় ‘গেল গেল’ রব তুলেছিলেন কিছু বিশেষজ্ঞ, বিরোধী রাজনীতির কিছু লোকজন ও কতিপয় মিডিয়া। কিন্তু, উৎসব শেষে কী দেখা গেল? সারা রাজ্যে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়ে গেলেন? কথাগুলো এক শ্রমজীবী মানুষের, যিনি করোনা পরিস্থিতে সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছিলেন, এখন কোনরকমে আবার উঠে দাঁড়াচ্ছেন। কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশের দাবি, দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে কেন্দ্রিয় সরকার চিন, আমেরিকা, জাপানের সঙ্গে আকাশপথ ও জলপথ অবিলম্বে বন্ধ ক্রুক। তা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে বিদেশ থেকে আগত প্রতিটি বিমান ও জলজাহাজ, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান থেকে সড়ক ও রেলপথে আগত প্রতিটি যাত্রীকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হোক। একদিকে, সব কিছু খুলে রেখে করোনাকে স্বাগত জানাবে, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়বে, খেটেখাওয়া মানুষেরা কাজ হারাবে, এটা হয়না।
শিক্ষিত সমাজের মানুষের একাংশের দাবি, করোনার টিকা নিয়ে কি গবেষণা এগোচ্ছে, না কি, সেই একই টিকা, সব ভেরিয়েন্টের জন্যই প্রয়োগ করা হচ্ছে। সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে তাদের বক্তব্য, টিকার সব ডোজ, বুস্টার নেওয়ার পরও কেন মানুষ করোনায় বার বার আক্রান্ত হচ্ছেন, সে ব্যাপারে সাধারণ ডাক্তার নন, ভাইরোলজিস্টদের মতামতের সঙ্গে তথ্য বাইরে আনুক।
রাজ্যের শ্রমজীবী মানুষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী তো, বলেছেন, এখনই মাস্ক পড়ার প্রয়োজন নেই, সমস্ত পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলা হচ্ছে। সময়ে যা যা করণীয়, তাই করা হবে।
তাহলে, তিনি কি সাত তাড়তাড়্রি সব বন্ধ করে দিয়ে রাজ্যকে রসাতলে পাঠাবেন? আর তাছাড়া, রাজ্যবাসী জানেন, করোনার পিক সময়ে এই রাজ্য যে ভূমিকা নিয়েছিল, তার জন্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা একেবারেই নিয়ন্ত্রণে ছিল। ভয়ানক পরিস্থির সৃষ্টি হয় নি।
সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজনের সঙ্গে এব্যাপারে কথা বলেছিল সংবাদ ভয়েস ৯। তাদের অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর বর্তমান সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, জমায়েত হলেই যদি করোনা ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়তো, তাহলে, বিগত উৎসবের সময়, সেটাই হতো। আসলে ভাইরাসের সঙ্গে সহাবস্থানে, মানুষের মধ্যে ন্যাচারাল ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে অনেকটা।
টিকার সঙ্গে এই ইমিউনিটি এই রাজ্যের মানুষকে অনেকটাই সুরক্ষা দিয়েছে। তাই এই রাজ্যে শ্রমিক শ্রেণি, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষরা যতনা করোনাতে আক্রান্ত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে সমাজের অন্য স্তরের মানুষ।
তাদের দাবি, এই বিষয়টা নিয়েও গবেষণা চালানো প্রয়োজন। অযথা আতঙ্ক ছাড়ানো নয়, প্রকৃত অবস্থা দেশবাসীকে জানানো, করোনা নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া।
মিডিয়াকেও এক হাত নিয়েছেন তারা। বলেছেন, কিছু মিডিয়া বাস্তব অবস্থা না দেখেই জনগণের মধ্যে ত্রাসের সঞ্চার করছে। ভাইরোলজিস্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার না নিয়ে, নিজের মত চাপিয়ে দিচ্ছে অনেক সময়।